প্রথমবার্তা প্রতিবেদকঃ বিমানের ইঞ্জিন নির্মাণ করা যুক্তরাজ্যের প্রতিষ্ঠান রোলস-রয়েস জানিয়েছে, তাদের নির্মিত বৈদ্যুতিক বিমান বিশ্বের বৈদ্যুতিক বিমানগুলোর মধ্যে দ্রুততম। বিমানটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্পিরিট অব ইনোভেশন’।
রোলস-রয়েস বলেছে, বিমানের পরীক্ষা চালানোর একটি সাইটে তাদের ওই বিমানের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৩৮৭.৪ মাইলে (৬২৩ কিলোমিটার) পৌঁছে। বিমানটি তিনটির বেশি ভিন্ন দূরত্বের পথ অতিক্রমে নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
রোলস-রয়েসের দাবি যাচাইয়ের জন্য ওয়ার্ল্ড এয়ার স্পোর্টস ফেডারেশনে পাঠানো হয়েছে।
গত ১৬ নভেম্বর উইল্টশায়ারের আমেসবারির বসকম্ব ডাউনে রোলস-রয়েসের ওই বিমানের পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন করা হয়েছিল।
বৈদ্যুতিক ওই বিমানের সর্বোচ্চ গতিবেগ তোলা পাইলট ও ফ্লাইট অপারেশনের পরিচালক ফিল ও’ডেল। তিনি বলেন, ‘এটি আমার ক্যারিয়ারের উল্লেখযোগ্য অর্জন। পুরো দলের জন্যই এটি একটি অবিশ্বাস্য অর্জন।’
রোলস-রয়েস বলেছে, স্পিরিট অব ইনোভেশন ২০১৭ সালে সিমেন্সের বৈদ্যুতিক বিমান এক্সট্রা ৩৩০ এলই এরোবেটিক বিমানের আগের রেকর্ডের চেয়ে প্রতি ঘণ্টায় ১৩২ মাইল বেশি দ্রুতগতির।
বিমানটি দ্রুত ওপরে ওঠার রেকর্ডও ভেঙেছে বলে মনে করা হচ্ছে। এটি ৬০ সেকেন্ডের মধ্যে ৯ হাজার ৮৪২ ফুট (তিন কিলোমিটার) ওপরে উঠতে সক্ষম হয়। আগের রেকর্ড ছিল ২০২ সেকেন্ড।
বিমানটিতে ৪০০ কিলোওয়াটের একটি পাওয়ারট্রেন ব্যবহার করা হয়, যা ৫৩৫ বিএইচপি সুপারকারের সমান।
রোল-রয়েস বলেছে, বিমানটিতে সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যাটারি সংযুক্ত করা হয়েছে, যা সাত হাজার ৫০০ ফোন চার্জ করার জন্য পর্যাপ্ত। কোনো বিমানে এই প্রথম এ ধরনের ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে।
রোলস-রয়েসের প্রধান নির্বাহী ওয়ারেন ইস্ট বলেছেন, জলবায়ু সম্মেলনে কার্বন নিঃসরণ কমাতে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়। এটি যুগান্তকারী, যা কার্বনমুক্ত আকাশযান তৈরিতে সাহায্য করবে।
তিনি বলেন, ‘আকাশ, স্থল এবং সমুদ্রজুড়ে পরিবহনকে কার্বনমুক্ত করতে আমাদের যে নতুন প্রযুক্তিগত উচ্চাকাঙ্ক্ষা রয়েছে, এটি সেই উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করে।’
রোলস-রয়েসের আশা, ফেডারেল এরোনটিক ইন্টারন্যাশনাল শিগগিরই ফলাফলগুলো যাচাই করে নতুন বিশ্বরেকর্ড হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেবে।
যুক্তরাজ্যের বাণিজ্যমন্ত্রী কোয়াসি কোয়াটাং বলেন, ‘এই প্রযুক্তি ভবিষ্যতের সম্ভাব্য বৈদ্যুতিক ফ্লাইট চালুর আশা দেখাবে। এই প্রকল্পের পাশে থাকায় যুক্তরাজ্য সরকার গর্বিত। জলবায়ুবান্ধব এই বিমানের প্রযুক্তি ভবিষ্যতে কার্বন নিঃসরণ কমাতে ভূমিকা রাখবে।’