প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: গতকাল (বুধবার) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তা বন্ধ করে অবস্থান নেওয়া নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনার পর সেখানে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বহু নেতাকর্মীকে কার্যালয় থেকে আটক করা হয়েছে।
এরপর যায় বাহিনীর ক্রাইম সিন ইউনিট।আজ (বৃহস্পতিবার) বিকাল ৪টার পর কার্যালয়ের ভেতর থেকে ডগ স্কোয়াড নিয়ে বের হতে দেখা যায় বাহিনীর সদস্যদের।
এদিকে বিএনপি কার্যালয়ে ক্রাইম সিন ইউনিট কাজ করায় আজ সকাল থেকে ব্যারিকেড দিয়ে রাখা হয় নাইটিঙ্গেল ও ফকিরাপুল মোড়। কেবল জরুরি সেবার সঙ্গে জড়িতদের প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছিল। বিকাল ৩টা ৫৫ মিনিটের দিকে খুলে দেওয়া হয় নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে বিএনপি কার্যালয়ের বিপরীত দিকের সড়ক। তবে ফকিরাপুলে এখনো পুলিশের ব্যারিকেড রয়েছে।
মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) এনামুল হক মিঠু জানান, ভেতরে তাদের ক্রাইম সিনের লোকজন কাজ করছেন। নিরাপত্তা বজায় রাখতে সবাইকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
উল্লেখ্য, বুধবার বিকাল ৩টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সড়ক বন্ধ করে দলটির নেতাকর্মীদের জমায়েত হওয়ায় পুলিশ তাদের সরাতে গেলে দুপক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ বেধে যায়। সকাল থেকেই নয়াপল্টনে কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে জমায়েত বড় হয়ে রাস্তার একপাশ বন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থায় পুলিশ তাদের সরিয়ে দিতে গেলে দুইপক্ষের মধ্যে পালটাপালটি ধাওয়া শুরু হয়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
দুইপক্ষের পালটাপালটি ধাওয়া ও সংঘর্ষে মকবুল হোসেন নামে একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেক নেতাকর্মী।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল জোনের ডিসি হায়াতুল ইসলাম খান গণমাধ্যমকে বলেন, সমাবেশের স্থান নিয়ে যখন আলোচনা চলছে তখন এ সংঘর্ষ শুরু হলো। আজ সকাল থেকেই পল্টনে বিএনপির নেতাকর্মীরা ভিড় করতে শুরু করেন। একপর্যায়ে পুরো রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। আমরা তাদের সরে যেতে বারবার অনুরোধ করি কিন্তু তারা আমাদের কথা শোনেননি। একপর্যায়ে তাদের সরিয়ে দিতে গেলে তারা পুলিশের ওপর হামলা করে। এতে আমাদের কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন। এ সময় কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।
আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পল্টন এলাকা। গতকাল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় বিএনপির কয়েকশ নেতাকর্মী নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন।
বিএনপি চায় তারা নয়াপল্টনে সমাবেশ করবে; কিন্তু পুলিশ বলছে, রাস্তায় সমাবেশ বা কোনো জমায়েত হওয়া যাবে না। পুলিশ রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে। তবে বিএনপি সেখানে সমাবেশ করবে না বলে অনড় রয়েছে। এরপর আরামবাগের আইডিয়াল স্কুলের সামনের রাস্তায় সমাবেশের জন্য বিএনপি অনুমতি চাইলে পুলিশে তাতে সাড়া দেয়নি। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে টঙ্গীর বিশ্ব ইতজেমার ময়দান অথবা পূর্বাচলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার মাঠে বিএনপি চাইলে সমাবেশ করতে পারে বলে প্রস্তাব দেওয়া হয়। এতে পুলিশের কোনো আপত্তি নেই বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।