প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: বিভিন্ন দেশের মেট্রো রেল পরিচালনার তথ্য থেকে দেখা গেছে, শুধু ভাড়ার আয় থেকে এই সেবা লাভজনকভাবে চালানো যায় না। এ কারণে মেট্রো রেলের আন্ত লাইন সংযোগ স্টেশন, ডিপো ও গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনসংলগ্ন এলাকায় ক্রমান্বয়ে ‘ট্রানজিট ওরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্ট (টিওডি) হাব’ এবং স্টেশন প্লাজা গড়ে তোলা হয়।
রাজধানীতে প্রথম মেট্রো রেল বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্র্যানজিট কম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) প্রতিটি এমআরটি লাইনে ন্যূনতম একটি টিওডি হাব নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে। প্রথম রুট এমআরটি লাইন-৬-এর উত্তরা সেন্টার স্টেশনসংলগ্ন জায়গায় টিওডি হাব তৈরির জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কাছ থেকে ২৮.৬২ একর জমি নেওয়া হয়েছে।
এই জমির দাম হিসেবে প্রায় ৮৬৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকা রাজউককে পরিশোধও করা হয়েছে। ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, চলতি বছরের ১ মার্চ মেট্রো রেলের লাইন বরাবর উন্নয়ন কার্যক্রম (টিওডি) বিষয়ক প্রকল্প বাস্তবায়নে আন্ত সংস্থা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় এমআরটি লাইন-৬-এর উত্তরা সেন্টার মেট্রো রেলস্টেশন সংলগ্ন এলাকায় টিওডি হাব নির্মাণের জন্য নির্ধারিত জমিকে ‘গ্রিন ফিল্ড’ এবং এমআরটি লাইন-৫ নর্দান রুটের গাবতলী মেট্রো রেলস্টেশন সংলগ্ন এলাকায় টিওডির জন্য নির্ধারিত জমিকে ‘ব্রাউন ফিল্ড’ হিসেবে চিহ্নিত করে জায়গা চূড়ান্ত করা হয়েছে। বর্তমানে এমআরটি লাইন-৬-এর উত্তরা সেন্টার মেট্রো রেলস্টেশন সংলগ্ন এলাকায় টিওডি নির্মাণের জন্য মাস্টারপ্ল্যান তৈরির কার্যক্রম চলছে। ঢাকা এমআরটি নেটওয়ার্কের প্রতিটি লাইনের প্রধান প্রধান মেট্রো রেলস্টেশন এলাকায় সুবিধাজনক স্থানে ন্যূনতম চারটি ‘স্টেশন প্লাজা’ গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এর আওতায় এমআরটি লাইন-৬-এর উত্তরা উত্তর, আগারগাঁও, ফার্মগেট ও কমলাপুর মেট্রো রেলস্টেশন সংলগ্ন এলাকায় জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। এরই মধ্যে স্টেশন প্লাজাগুলোর পরিকল্পনা প্রস্তুত করা হয়েছে। এমআরটি লাইন-৬-এর দুই প্রান্ত উত্তরা উত্তর ও কমলাপুর মেট্রো রেল টার্মিনাল স্টেশন দুটিতে দীর্ঘ মেয়াদে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
এ ছাড়া মেট্রো রেলের জন্য একটি বাণিজ্যিক নীতিমালাও চূড়ান্ত করা হচ্ছে। নীতিমালায় দোকানভাড়া ও বিভিন্ন আয়ের উৎস উল্লেখ করা হবে। কুরিয়ার সার্ভিসের জন্য মেট্রো রেলের স্টেশন এলাকায় জায়গা রাখা হচ্ছে। চলচ্চিত্রের শুটিং করারও ব্যবস্থা থাকবে। শুরুর দিকে মেট্রো রেল প্রকল্পের ব্যয় ছিল প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা। পথ সম্প্রসারণ, স্টেশন প্লাজা নির্মাণ, কিছু স্টেশনে নতুন করে জমি অধিগ্রহণ, পরামর্শকের পেছনে ব্যয় বৃদ্ধি, পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, বাড়তি ভ্যাটসহ বিভিন্ন কারণে ব্যয় প্রায় সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকায়।