ঢাকা , শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এ বছর যা ঘটল চীনে

  • পোষ্ট হয়েছে : ০২:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২২
  • / ৪৬ বার দেখা হয়েছে

প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: গত কয়েক বছর ধরে চীন বেশ আলোচনায় রয়েছে। বিশেষ করে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষের দিকে করোনাভাইরাস মহামারি শনাক্ত হওয়ার পর সারা বিশ্বের মানুষের নজর ছিল চীনের দিকে।

 

এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জেরে আলোচনায় ছিল বেইজিং। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরু হলে বেইজিংয়ের ভূমিকা কী হয়, সেদিকে বিশ্ববাসীর নজর ছিল।

 

চীন অবশ্য বেশ মাপজোখ করে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিয়েছে। তার পরেও মার্কিন চাপ উপেক্ষা করতে পারেনি চীন। তাইওয়ানে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সফর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে তুলেছে।

 

অন্যদিকে চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেসের ওপরও নজর ছিল বিশ্ববাসীর। তৃতীয় মেয়াদে সাধারণ সম্পাদক হয়ে চীনা পিপলস রিপাবলিকে নিজের অবস্থান পাকা করেছেন শি চিনপিং।

 

গত ১৬ অক্টোবর সিসিপির সপ্তাহব্যাপী জাতীয় কংগ্রেস শুরু হয়। এ কংগ্রেস ঘিরে কৌতূহলের অন্যতম জায়গা ছিল, দলের সাধারণ সম্পাদক পদে শি চিনপিং থাকছেন কি না।

 

সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে শিকে দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আরো পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত করে কেন্দ্রীয় কমিটি। ফলে আগামী মেয়াদেও চীনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন তিনি।

 

করোনা ঠেকাতে নেওয়া কঠোর ‘শূন্য কভিড’ নীতির বিরুদ্ধে দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভের জেরে কড়াকড়ির পথ থেকে সরে এসেছে চীন সরকার। এরপর সে দেশে করোনার ঢেউ আছড়ে পড়েছে বলে খবর বেরিয়েছে।

 

বিক্ষোভের শুরুটা হয় জিনজিয়াং প্রদেশের রাজধানী উরুমকির এক আবাসিক ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১০ জন নিহত হওয়ার জেরে। তাদের ভবনে আটকে পড়া ও উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হওয়ার জন্য করোনার বিধি-নিষেধকে দায়ী করা হয়।

 

এরপর সাংহাইসহ দেশটির বড় শহরগুলোতে বিরল বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত করোনা বিধি-নিষেধ শিথিল করতে বাধ্য হয় চীন সরকার। প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের সৌদি আরব সফর ছিল আলোচনায়।

 

সাত বছর পর ডিসেম্বরে তিনি মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দেশটি সফরে যান। তার এ সফরকালে বিশ্বের শীর্ষ তেল রপ্তানিকারক দেশটির সঙ্গে কৌশলগত চুক্তি স্বাক্ষর করেছে চীন।

 

গত আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের কারণে চীন বেশ নাখোশ হয়। চীন শুধু প্রতিবাদ করে বা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েই থেমে থাকেনি, বরং তার সফরের সময়ই তাইওয়ানের পণ্য আমদানি ও প্রতিবেশী দেশটিতে সিলিকন রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বেইজিং।

 

আর পেলোসির সফর শেষ হওয়ার পরদিনই তাইওয়ানের চারপাশে বিশাল সামরিক মহড়া শুরু করে চীন।যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের উত্তেজনার পারদ কমাতে ভূমিকা রাখে জি-২০ সম্মেলন।

 

ইন্দোনেশিয়ার বালিতে এ জোটের শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং।বৈঠকে দুই নেতা যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে চলমান বিরোধ কমিয়ে আনতে ঐকমত্যে পৌঁছেন।

 

ওই বৈঠকের মধ্য দিয়ে বাইডেন ও শি চিনপিং আপাতত দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কের উত্তপ্ত অবস্থাকে শীতল করেছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সূত্র : ইনসাইডার, সিএনএন, সিএনবিসি, গার্ডিয়ান

ট্যাগ :

শেয়ার দিয়ে সাথেই থাকুন

এ বছর যা ঘটল চীনে

পোষ্ট হয়েছে : ০২:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২২

প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: গত কয়েক বছর ধরে চীন বেশ আলোচনায় রয়েছে। বিশেষ করে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষের দিকে করোনাভাইরাস মহামারি শনাক্ত হওয়ার পর সারা বিশ্বের মানুষের নজর ছিল চীনের দিকে।

 

এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জেরে আলোচনায় ছিল বেইজিং। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরু হলে বেইজিংয়ের ভূমিকা কী হয়, সেদিকে বিশ্ববাসীর নজর ছিল।

 

চীন অবশ্য বেশ মাপজোখ করে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিয়েছে। তার পরেও মার্কিন চাপ উপেক্ষা করতে পারেনি চীন। তাইওয়ানে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সফর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে তুলেছে।

 

অন্যদিকে চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেসের ওপরও নজর ছিল বিশ্ববাসীর। তৃতীয় মেয়াদে সাধারণ সম্পাদক হয়ে চীনা পিপলস রিপাবলিকে নিজের অবস্থান পাকা করেছেন শি চিনপিং।

 

গত ১৬ অক্টোবর সিসিপির সপ্তাহব্যাপী জাতীয় কংগ্রেস শুরু হয়। এ কংগ্রেস ঘিরে কৌতূহলের অন্যতম জায়গা ছিল, দলের সাধারণ সম্পাদক পদে শি চিনপিং থাকছেন কি না।

 

সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে শিকে দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আরো পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত করে কেন্দ্রীয় কমিটি। ফলে আগামী মেয়াদেও চীনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন তিনি।

 

করোনা ঠেকাতে নেওয়া কঠোর ‘শূন্য কভিড’ নীতির বিরুদ্ধে দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভের জেরে কড়াকড়ির পথ থেকে সরে এসেছে চীন সরকার। এরপর সে দেশে করোনার ঢেউ আছড়ে পড়েছে বলে খবর বেরিয়েছে।

 

বিক্ষোভের শুরুটা হয় জিনজিয়াং প্রদেশের রাজধানী উরুমকির এক আবাসিক ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১০ জন নিহত হওয়ার জেরে। তাদের ভবনে আটকে পড়া ও উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হওয়ার জন্য করোনার বিধি-নিষেধকে দায়ী করা হয়।

 

এরপর সাংহাইসহ দেশটির বড় শহরগুলোতে বিরল বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত করোনা বিধি-নিষেধ শিথিল করতে বাধ্য হয় চীন সরকার। প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের সৌদি আরব সফর ছিল আলোচনায়।

 

সাত বছর পর ডিসেম্বরে তিনি মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দেশটি সফরে যান। তার এ সফরকালে বিশ্বের শীর্ষ তেল রপ্তানিকারক দেশটির সঙ্গে কৌশলগত চুক্তি স্বাক্ষর করেছে চীন।

 

গত আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের কারণে চীন বেশ নাখোশ হয়। চীন শুধু প্রতিবাদ করে বা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েই থেমে থাকেনি, বরং তার সফরের সময়ই তাইওয়ানের পণ্য আমদানি ও প্রতিবেশী দেশটিতে সিলিকন রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বেইজিং।

 

আর পেলোসির সফর শেষ হওয়ার পরদিনই তাইওয়ানের চারপাশে বিশাল সামরিক মহড়া শুরু করে চীন।যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের উত্তেজনার পারদ কমাতে ভূমিকা রাখে জি-২০ সম্মেলন।

 

ইন্দোনেশিয়ার বালিতে এ জোটের শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং।বৈঠকে দুই নেতা যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে চলমান বিরোধ কমিয়ে আনতে ঐকমত্যে পৌঁছেন।

 

ওই বৈঠকের মধ্য দিয়ে বাইডেন ও শি চিনপিং আপাতত দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কের উত্তপ্ত অবস্থাকে শীতল করেছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সূত্র : ইনসাইডার, সিএনএন, সিএনবিসি, গার্ডিয়ান