ঢাকা , শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যে কঠিন বার্তা দিলেন এরদোগান বিরোধীদের

  • পোষ্ট হয়েছে : ০৫:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ৫৬ বার দেখা হয়েছে

প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: আসছে ১৪ মে তুরস্কে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এ উপলক্ষে ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো নির্বাচন সংক্রান্ত কর্মসূচিতে বক্তব্য দিচ্ছেন।

 

বসে নেই বিরোধীরাও। দুই দশক ধরে তুরস্ক শাসন করা এরদোগানকে থামাতে এবার ছয়টি বিরোধী দল মিলে জোট করেছে। টেবিল অব সিক্স বা ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স নামক জোটের প্রধান নেতা হলেন প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি তথা সিএইচপির উপপ্রধান ফাইক ওজতার্ক। তিনি বিরোধী জোটের একক প্রার্থী হিসেবে এরদোগানের মোকাবিলা করবেন।

 

সম্প্রতি বিরোধী জোট ২০০ পৃষ্ঠার একটি নির্বাচনি ইশতেহার প্রকাশ করেছে। যেখানে নির্বাচনে জয়ী হলে ছয় দলীয় কী কী করবে, তার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। জোটের প্রতিশ্রুতির মধ্যে অন্যতম হলো, সংসদীয় ব্যবস্থা (প্রধানমন্ত্রী পদ্ধতি) পুনঃপ্রবর্তন, উদার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ, সংসদের ভূমিকা বৃদ্ধি এবং স্বাধীন বিচারব্যবস্থা কায়েম। ২০১৮ সালে এরদোগান সরকার প্রধানমন্ত্রী ব্যবস্থা বাতিল করে প্রেসিডেন্ট সিস্টেম চালু করে।

 

‘টেবিল অব সিক্স’-এ থাকা দলগুলোর (সিএইচপি, গুড পার্টি, ফেলিসিটি পার্টি, ডেমোক্র্যাটিক পার্টি, প্রোগ্রেস পার্টি ও ফিউচার পার্টি) অভিযোগ হলো প্রেসিডেন্ট ব্যবস্থা চালু করে এরদোগান একনায়কতন্ত্র কায়েম করেছেন। তাই তাদের প্রধান লক্ষ্য হলো সংসদীয় গণতন্ত্রে ফেরা।

 

বিরোধী জোটের ওই নির্বাচনি প্রতিশ্রুতির তীব্র সমালোচনা করেছেন এরদোগান। তিনি বলেছেন, তারা যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তাতে নতুন কিছু নেই। তার দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (এ কে পার্টি) গত ২০ বছরে ইতোমধ্যে এগুলো সম্পন্ন করেছে, অথবা সম্পন্ন করার চেষ্টা করছে।

 

ডেইলি সাবাহ জানিয়েছে, শনিবার পশ্চিমাঞ্চলীয় আইদিন প্রদেশে এক অনুষ্ঠানে তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘যারা তাদের কর্মসূচির মাধ্যমে ইউরোপের আনুকূল্য পেয়ে গর্ববোধ করে, তারা প্রকাশ্যে এ কথা স্বীকার করে নিল যে, তাদের লাগাম (নিয়ন্ত্রণ) সাম্রাজ্যবাদী ঔপনিবেশিকদের হাতে।’

 

এরদোগান আরও বলেন, ‘তাদের এই প্রতিশ্রুতি পুরনো তুরস্কে ফিরে যাওয়ার কর্মসূচি, যেখানে বিরাজ করবে অনিরাপত্তা, অস্থিতিশীলতা ও দ্বন্দ্ব-সংঘাত। আর এর মাধ্যমে তারা তাদের প্রভুদের কাছ থেকে বাহবা পাবে।’

 

তুর্কি নেতা জোর দিয়ে বলেন, ‘মুস্তাফা কামাল আতাতুর্ক এই প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, আমরা প্রতি পদে পদে সাম্রাজ্যবাদীদের সঙ্গে লড়াই করে তুরস্ককে আজকের পর্যায়ে নিয়ে এসেছি।’

 

এ সময় এরদোগান বিরোধীদের উদ্দেশে তার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন এবং বলেন, তারা আবারও তুরস্ককে শৃঙ্খল পরাতে ব্যর্থ হবে। আগামী ১৪ মে আন্তর্জাতিক রাজনীতির গুটি তাদের যথাযথ জবাব দেবে।

 

এর কয়েকদিন আগে বিরোধীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় যে, আসন্ন নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট অংশ নিতে পারবেন না। এর জবাবে এরদোগান বলেছিলেন, দেশের সংবিধান অনুযায়ী তার নির্বাচন করার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই। বিরোধীরা আসলে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে পানি ঘোলা করার চেষ্টা করছে।

ট্যাগ :

শেয়ার দিয়ে সাথেই থাকুন

যে কঠিন বার্তা দিলেন এরদোগান বিরোধীদের

পোষ্ট হয়েছে : ০৫:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: আসছে ১৪ মে তুরস্কে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এ উপলক্ষে ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো নির্বাচন সংক্রান্ত কর্মসূচিতে বক্তব্য দিচ্ছেন।

 

বসে নেই বিরোধীরাও। দুই দশক ধরে তুরস্ক শাসন করা এরদোগানকে থামাতে এবার ছয়টি বিরোধী দল মিলে জোট করেছে। টেবিল অব সিক্স বা ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স নামক জোটের প্রধান নেতা হলেন প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি তথা সিএইচপির উপপ্রধান ফাইক ওজতার্ক। তিনি বিরোধী জোটের একক প্রার্থী হিসেবে এরদোগানের মোকাবিলা করবেন।

 

সম্প্রতি বিরোধী জোট ২০০ পৃষ্ঠার একটি নির্বাচনি ইশতেহার প্রকাশ করেছে। যেখানে নির্বাচনে জয়ী হলে ছয় দলীয় কী কী করবে, তার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। জোটের প্রতিশ্রুতির মধ্যে অন্যতম হলো, সংসদীয় ব্যবস্থা (প্রধানমন্ত্রী পদ্ধতি) পুনঃপ্রবর্তন, উদার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ, সংসদের ভূমিকা বৃদ্ধি এবং স্বাধীন বিচারব্যবস্থা কায়েম। ২০১৮ সালে এরদোগান সরকার প্রধানমন্ত্রী ব্যবস্থা বাতিল করে প্রেসিডেন্ট সিস্টেম চালু করে।

 

‘টেবিল অব সিক্স’-এ থাকা দলগুলোর (সিএইচপি, গুড পার্টি, ফেলিসিটি পার্টি, ডেমোক্র্যাটিক পার্টি, প্রোগ্রেস পার্টি ও ফিউচার পার্টি) অভিযোগ হলো প্রেসিডেন্ট ব্যবস্থা চালু করে এরদোগান একনায়কতন্ত্র কায়েম করেছেন। তাই তাদের প্রধান লক্ষ্য হলো সংসদীয় গণতন্ত্রে ফেরা।

 

বিরোধী জোটের ওই নির্বাচনি প্রতিশ্রুতির তীব্র সমালোচনা করেছেন এরদোগান। তিনি বলেছেন, তারা যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তাতে নতুন কিছু নেই। তার দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (এ কে পার্টি) গত ২০ বছরে ইতোমধ্যে এগুলো সম্পন্ন করেছে, অথবা সম্পন্ন করার চেষ্টা করছে।

 

ডেইলি সাবাহ জানিয়েছে, শনিবার পশ্চিমাঞ্চলীয় আইদিন প্রদেশে এক অনুষ্ঠানে তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘যারা তাদের কর্মসূচির মাধ্যমে ইউরোপের আনুকূল্য পেয়ে গর্ববোধ করে, তারা প্রকাশ্যে এ কথা স্বীকার করে নিল যে, তাদের লাগাম (নিয়ন্ত্রণ) সাম্রাজ্যবাদী ঔপনিবেশিকদের হাতে।’

 

এরদোগান আরও বলেন, ‘তাদের এই প্রতিশ্রুতি পুরনো তুরস্কে ফিরে যাওয়ার কর্মসূচি, যেখানে বিরাজ করবে অনিরাপত্তা, অস্থিতিশীলতা ও দ্বন্দ্ব-সংঘাত। আর এর মাধ্যমে তারা তাদের প্রভুদের কাছ থেকে বাহবা পাবে।’

 

তুর্কি নেতা জোর দিয়ে বলেন, ‘মুস্তাফা কামাল আতাতুর্ক এই প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, আমরা প্রতি পদে পদে সাম্রাজ্যবাদীদের সঙ্গে লড়াই করে তুরস্ককে আজকের পর্যায়ে নিয়ে এসেছি।’

 

এ সময় এরদোগান বিরোধীদের উদ্দেশে তার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন এবং বলেন, তারা আবারও তুরস্ককে শৃঙ্খল পরাতে ব্যর্থ হবে। আগামী ১৪ মে আন্তর্জাতিক রাজনীতির গুটি তাদের যথাযথ জবাব দেবে।

 

এর কয়েকদিন আগে বিরোধীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় যে, আসন্ন নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট অংশ নিতে পারবেন না। এর জবাবে এরদোগান বলেছিলেন, দেশের সংবিধান অনুযায়ী তার নির্বাচন করার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই। বিরোধীরা আসলে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে পানি ঘোলা করার চেষ্টা করছে।