ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছেলের বন্ধুরা হত্যা করলেন সাবেক ইউপি সদস্যকে

  • পোষ্ট হয়েছে : ০৫:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ৫১ বার দেখা হয়েছে

প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: বগুড়ার শিবগঞ্জে ছেলের সঙ্গে বিরোধের জেরে তার দুই বন্ধু সাবেক ইউপি সদস্য নারগিস আরা বেগমকে (৫৫) ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। রোববার রাতে গ্রেফতারের পর তারা পুলিশের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করেছে।

 

ওই দিন সকালে উপজেলার রায়নগর ইউনিয়নের রায়নগর মধ্যপাড়া গ্রামের শয়ন ঘরে এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে নিহতের মেয়ে ডা. তানিয়া আফরোজ শিবগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেছেন।

 

শিবগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাসমত উল্লাহ জানান, স্বীকারোক্তি রেকর্ডের জন্য গ্রেফতার দুইজনকে সোমবার বিকালে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়েছে।

 

গ্রেফতার দুজন হলেন— বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার রায়নগর ইউনিয়নের রায়নগর মধ্যপাড়া গ্রামের মিলন শেখের ছেলে মুন্না শেখ (২২) ও রায়নগর পশ্চিমপাড়ার লুলু মিয়ার ছেলে খালেদ হাসান (২২)।

 

সোমবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে প্রেস বিফ্রিংয়ে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবদুর রশিদ জানান, নারগিস আরা বেগম শিবগঞ্জ উপজেলার রায়নগর ইউনিয়নের রায়নগর মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রায়নগর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মরহুম আবদুল কাদের ফকিরের স্ত্রী। তিনি রায়নগর ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য ছিলেন। তিনি বগুড়ার নিশিন্দারা উপশহর এলাকায় ছোট মেয়ে ডা. তানিয়ার আফরোজের বাড়িতে থাকতেন।

 

রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি স্বামীর বাড়িতে আসেন। এরপর নারগিসকে মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়নি। সন্ধ্যায় বাড়ির শয়ন ঘরের মেঝেতে তার রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে মেয়ে বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে শিবগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।

 

এদিকে মামলা দায়েরের পর পুলিশ মাঠে নামে। তদন্তে জানা যায়, নিহতের ছেলে আজিজুল ইসলাম মাদকাসক্ত। বর্তমানে তিনি একটি মাদক নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আজিজুল তার বন্ধু মুন্না শেখ ও খালেদ হাসানের সঙ্গে মাদক সেবন করেন। মাদক সেবন বা অন্য কোনো কারণে আজিজুলের সঙ্গে দুই বন্ধুর বিরোধ সৃষ্টি হয়। তারা তার মা নারগিসকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

 

রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি (নারগিস) বাড়িতে ফেরেন। এর কিছুক্ষণ পর মুন্না বাড়িতে ঢুকে ধারালো ছুরি দিয়ে নারগিসের গলা, পিঠ ও মাথায় কুপিয়ে পালিয়ে যান। এ সময় খালেদ বাড়ির সামনে পাহারায় ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের আগে মুন্না ও খালেদ ওই বাড়ির সামনে ঘোরাফেরা করছিলেন।

 

পুলিশ স্থানীয়দের কাছে বিষয়টি জানতে পেরে রোববার রাত ১টার দিকে নিজ বাসা থেকে খালেদকে গ্রেফতার করে। তার দেওয়া তথ্যে রাত ৩টার দিকে বগুড়া সদরের মাটিডালি এলাকা থেকে মুন্নাকে গ্রেফতার করা হয়।

 

পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুইজনই সাবেক ইউপি সদস্য নারগিসকে হত্যার দায় স্বীকার করে। পরে তাদের দেখানো মতে নিহতের বাড়ি পাশের পুকুরপাড়ের ঝোঁপ থেকে রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করা হয়।

ট্যাগ :

শেয়ার দিয়ে সাথেই থাকুন

ছেলের বন্ধুরা হত্যা করলেন সাবেক ইউপি সদস্যকে

পোষ্ট হয়েছে : ০৫:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: বগুড়ার শিবগঞ্জে ছেলের সঙ্গে বিরোধের জেরে তার দুই বন্ধু সাবেক ইউপি সদস্য নারগিস আরা বেগমকে (৫৫) ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। রোববার রাতে গ্রেফতারের পর তারা পুলিশের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করেছে।

 

ওই দিন সকালে উপজেলার রায়নগর ইউনিয়নের রায়নগর মধ্যপাড়া গ্রামের শয়ন ঘরে এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে নিহতের মেয়ে ডা. তানিয়া আফরোজ শিবগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেছেন।

 

শিবগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাসমত উল্লাহ জানান, স্বীকারোক্তি রেকর্ডের জন্য গ্রেফতার দুইজনকে সোমবার বিকালে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়েছে।

 

গ্রেফতার দুজন হলেন— বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার রায়নগর ইউনিয়নের রায়নগর মধ্যপাড়া গ্রামের মিলন শেখের ছেলে মুন্না শেখ (২২) ও রায়নগর পশ্চিমপাড়ার লুলু মিয়ার ছেলে খালেদ হাসান (২২)।

 

সোমবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে প্রেস বিফ্রিংয়ে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবদুর রশিদ জানান, নারগিস আরা বেগম শিবগঞ্জ উপজেলার রায়নগর ইউনিয়নের রায়নগর মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রায়নগর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মরহুম আবদুল কাদের ফকিরের স্ত্রী। তিনি রায়নগর ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য ছিলেন। তিনি বগুড়ার নিশিন্দারা উপশহর এলাকায় ছোট মেয়ে ডা. তানিয়ার আফরোজের বাড়িতে থাকতেন।

 

রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি স্বামীর বাড়িতে আসেন। এরপর নারগিসকে মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়নি। সন্ধ্যায় বাড়ির শয়ন ঘরের মেঝেতে তার রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে মেয়ে বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে শিবগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।

 

এদিকে মামলা দায়েরের পর পুলিশ মাঠে নামে। তদন্তে জানা যায়, নিহতের ছেলে আজিজুল ইসলাম মাদকাসক্ত। বর্তমানে তিনি একটি মাদক নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আজিজুল তার বন্ধু মুন্না শেখ ও খালেদ হাসানের সঙ্গে মাদক সেবন করেন। মাদক সেবন বা অন্য কোনো কারণে আজিজুলের সঙ্গে দুই বন্ধুর বিরোধ সৃষ্টি হয়। তারা তার মা নারগিসকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

 

রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি (নারগিস) বাড়িতে ফেরেন। এর কিছুক্ষণ পর মুন্না বাড়িতে ঢুকে ধারালো ছুরি দিয়ে নারগিসের গলা, পিঠ ও মাথায় কুপিয়ে পালিয়ে যান। এ সময় খালেদ বাড়ির সামনে পাহারায় ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের আগে মুন্না ও খালেদ ওই বাড়ির সামনে ঘোরাফেরা করছিলেন।

 

পুলিশ স্থানীয়দের কাছে বিষয়টি জানতে পেরে রোববার রাত ১টার দিকে নিজ বাসা থেকে খালেদকে গ্রেফতার করে। তার দেওয়া তথ্যে রাত ৩টার দিকে বগুড়া সদরের মাটিডালি এলাকা থেকে মুন্নাকে গ্রেফতার করা হয়।

 

পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুইজনই সাবেক ইউপি সদস্য নারগিসকে হত্যার দায় স্বীকার করে। পরে তাদের দেখানো মতে নিহতের বাড়ি পাশের পুকুরপাড়ের ঝোঁপ থেকে রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করা হয়।