ঢাকা , শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা যে কারণে দক্ষিণ আফ্রিকায়

  • পোষ্ট হয়েছে : ১০:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ৪৩ বার দেখা হয়েছে

প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: বিদ্যুৎ ঘাটতি দিন দিন গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ায় ‘দুর্যোগ পরিস্থিতি’ ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার। বৃহস্পতিবার দেশটির প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা এ ঘোষণা দেন। খবর আলজাজিরার।

 

টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে রামাফোসা বলেন, আমাদের বিদ্যুৎ ঘাটতি দিন দিন তীব্র থেকে তীব্রতর রূপ নিচ্ছে। সমাজের প্রতিটি অংশ এ সংকটের শিকার।

 

কৃষক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, পানি সরবরাহ পরিষেবা ও পরিবহণ ব্যবস্থাকে এ সংকটের কবল থেকে বাঁচাতে হলে আমাদের এখন থেকেই তৎপর হতে হবে। এ কারণে বিদ্যুৎ সংকট ও তার ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় আমরা জরুরি দুর্যোগ পরিস্থিতি ঘোষণা করছি।

 

উন্নত দেশের তালিকায় থাকা দক্ষিণ আফ্রিকায় বিদ্যুৎ ঘাটতি শুরু হয়েছে কয়েক বছর আগে থেকে; কিন্তু বর্তমানে তা আক্ষরিক অর্থেই অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। কয়েক মাস ধরে রাষ্ট্রীয় জ্বালানি সংস্থা এসকম প্রতিদিন ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং করতে বাধ্য হয়েছে। ফলে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি গত বছরের ২.৫ শতাংশ থেকে চলতি বছর ০.৩ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷

 

দক্ষিণ আফ্রিকায় বিদ্যুতের মূল সরবরাহ আসে দেশটির কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো থেকে। গত কয়েক বছর ধরে চাহিদা সত্ত্বেও নতুন কোনো কেন্দ্র নির্মাণ করেনি দেশটি, বিদ্যমান কেন্দ্রগুলোর উৎপাদনক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদক্ষেপও নেয়নি।

 

সেই সঙ্গে কয়লা ক্রয় ও সরবরাহ চুক্তিতে দুর্নীতি, বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে নাশকতাসহ বিভিন্ন দুর্নীতির ফলে আজকের এ পরিস্থিতিতে এসে দাঁড়িয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমার আমলে এসব দুর্নীতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি।

 

দক্ষিণ আফ্রিকার সাধারণ জনগণের অনেকেই প্রেসিডেন্টের এ ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে তারা বলছেন- দুর্নীতি বন্ধ করা না গেলে এই জাতীয় দুর্যোগ পরিস্থিতি ঘোষণায় কোনো লাভ হবে না।

 

রাজধানী কেপটাউনের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ব্রাইটন লুপেগো বার্তাসংস্থা র‌য়টার্সকে বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও বিদ্যুৎ ঘাটতি।

 

প্রেসিডেন্ট রামাফোসা এসব সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছেন। আমরা সেসব উদ্যোগ সমর্থনও করি; কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত রাজনীতিবিদ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের দুর্নীতি বন্ধ করা না যাবে, ততদিন দেশের পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হবে না।

ট্যাগ :

শেয়ার দিয়ে সাথেই থাকুন

জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা যে কারণে দক্ষিণ আফ্রিকায়

পোষ্ট হয়েছে : ১০:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: বিদ্যুৎ ঘাটতি দিন দিন গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ায় ‘দুর্যোগ পরিস্থিতি’ ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার। বৃহস্পতিবার দেশটির প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা এ ঘোষণা দেন। খবর আলজাজিরার।

 

টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে রামাফোসা বলেন, আমাদের বিদ্যুৎ ঘাটতি দিন দিন তীব্র থেকে তীব্রতর রূপ নিচ্ছে। সমাজের প্রতিটি অংশ এ সংকটের শিকার।

 

কৃষক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, পানি সরবরাহ পরিষেবা ও পরিবহণ ব্যবস্থাকে এ সংকটের কবল থেকে বাঁচাতে হলে আমাদের এখন থেকেই তৎপর হতে হবে। এ কারণে বিদ্যুৎ সংকট ও তার ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় আমরা জরুরি দুর্যোগ পরিস্থিতি ঘোষণা করছি।

 

উন্নত দেশের তালিকায় থাকা দক্ষিণ আফ্রিকায় বিদ্যুৎ ঘাটতি শুরু হয়েছে কয়েক বছর আগে থেকে; কিন্তু বর্তমানে তা আক্ষরিক অর্থেই অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। কয়েক মাস ধরে রাষ্ট্রীয় জ্বালানি সংস্থা এসকম প্রতিদিন ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং করতে বাধ্য হয়েছে। ফলে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি গত বছরের ২.৫ শতাংশ থেকে চলতি বছর ০.৩ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷

 

দক্ষিণ আফ্রিকায় বিদ্যুতের মূল সরবরাহ আসে দেশটির কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো থেকে। গত কয়েক বছর ধরে চাহিদা সত্ত্বেও নতুন কোনো কেন্দ্র নির্মাণ করেনি দেশটি, বিদ্যমান কেন্দ্রগুলোর উৎপাদনক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদক্ষেপও নেয়নি।

 

সেই সঙ্গে কয়লা ক্রয় ও সরবরাহ চুক্তিতে দুর্নীতি, বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে নাশকতাসহ বিভিন্ন দুর্নীতির ফলে আজকের এ পরিস্থিতিতে এসে দাঁড়িয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমার আমলে এসব দুর্নীতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি।

 

দক্ষিণ আফ্রিকার সাধারণ জনগণের অনেকেই প্রেসিডেন্টের এ ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে তারা বলছেন- দুর্নীতি বন্ধ করা না গেলে এই জাতীয় দুর্যোগ পরিস্থিতি ঘোষণায় কোনো লাভ হবে না।

 

রাজধানী কেপটাউনের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ব্রাইটন লুপেগো বার্তাসংস্থা র‌য়টার্সকে বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও বিদ্যুৎ ঘাটতি।

 

প্রেসিডেন্ট রামাফোসা এসব সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছেন। আমরা সেসব উদ্যোগ সমর্থনও করি; কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত রাজনীতিবিদ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের দুর্নীতি বন্ধ করা না যাবে, ততদিন দেশের পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হবে না।