1. [email protected] : bijoy : bijoy Book
  2. [email protected] : News Room : News Room
  3. [email protected] : news uploader : news uploader
  4. [email protected] : prothombarta :
জামায়াতের আন্দোলন ও নির্বাচনের প্রস্তুতি
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৩৫ রাত

জামায়াতের আন্দোলন ও নির্বাচনের প্রস্তুতি

  • পোষ্ট হয়েছে : বৃহস্পতিবার, ৪ মে, ২০২৩

প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক:তত্ত্বাধায়ক সরকারের দাবি আদায়ে রাজপথে সরব এবং সক্রিয় থাকার পাশাপাশি পুরোদমে নির্বাচনের প্রস্তুতিও নিতে শুরু করেছে জামায়াতে ইসলামী।

 

যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে নিবন্ধন বাতিল হওয়া এই দলটি স্বতন্ত্রভাবেই ভোটের লড়াইয়ে অবতীর্ণ হবে। সে অনুযায়ী ঘর গোছানোর কাজে মন দিয়েছে। সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে অংশ নেয় জামায়াতে ইসলামী। আগামী নির্বাচনেও একই পথে হাঁটতে চান তারা।

 

যদিও জামায়াতে ইসলামীর নেতারা বলছেন, তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চান। এই দাবিতে বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী দলের সঙ্গে রাজপথে যুগপৎভাবে দীর্ঘদিন ধরেই মাঠে আছে দলটি। জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের মতে, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে নির্বাচনের অতীত অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। মানুষ নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেনি।

 

তাই তারা দলীয় সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে না। তাদের মতে, রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে দলটি। আর নির্বাচনের সময়ও বেশি হাতে নেই। তাই বসে না থেকে ভোটের প্রস্তুতির কাজটি গুছিয়ে রাখতে চান তারা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আন্দোলনের পাশাপাশি সংগঠনকে গোছানো এবং দলকে নির্বাচনমুখী করাকেই এই মুহূর্তে প্রাধান্য দিচ্ছেন জামায়াতে ইসলামীর নীতিনির্ধারকরা। বৈরী এবং প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেই দলটির শীর্ষ নেতারা কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম নিয়ে বেশি ব্যস্ত রয়েছেন। তারা বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে যাচ্ছেন, প্রতিদিনই নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করছেন।

 

নির্বাচনি প্রস্তুতির অংশ হিসাবে রোববার জামায়াতে ইসলামীর কারাবন্দি আমির ডা. শফিকুর রহমানের নির্বাচনি এলাকা ঢাকা-১৫ সংসদীয় আসনে সাংগঠনিক তৎপরতা বাড়ানোর জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের এক ভার্চুয়াল সভায় তিনি এ আহ্বান জানান। তিনি নিজেও কুমিল্লা-১১ আসন থেকে আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার যাবতীয় প্রস্তুতি শুরু করেছেন।

 

সূত্র জানায়, ওই ভার্চুয়াল সভায় ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘নির্বাচন একটি যুদ্ধক্ষেত্র। তাই এই যুদ্ধের ফলাফল নিজেদের অনুকূলে আনতে হলে জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। বস্তুত নির্বাচনি চরিত্র হচ্ছে গণমুখী। এ আসনে আগামী দিনে আমাদের প্রিয় নেতা ডা. শফিকুর রহমানকে বিজয়ী করতে হলে দাওয়াতি কার্যক্রম সম্প্রসারণের কোনো বিকল্প নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘এজন্য প্রতিটি কর্মীকে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছতে হবে। মানুষের সমস্যার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনে সেসব সমস্যা সমাধানের সাধ্যমতো প্রচেষ্টা চালাতে হবে। আর সংগঠনকে গণমুখী করতে পারলেই আমরা এই আসনে বিজয়ী হতে পারব।’

 

ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ঢাকা-১৫ আসনে দলীয় অবস্থান মজবুত করার জন্য নেতাকর্মীদের মেধা, যোগ্যতা ও প্রজ্ঞাসহ সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানান সভা থেকে। ঢাকা মহানগর উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দীন মানিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন-দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইজ্জত উল্লঅহ, ঢাকা মহানগর উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আমির আব্দুর রহমান মূসা এবং সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম প্রমুখ।

 

১৯৮৬ সালের ৭ মে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী ৭৬টি আসনে প্রার্থী দেয়। ওই নির্বাচনে দলটি ১০টি আসনে জয়ী হয়। ১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে জামায়াতে ইসলামী। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে তারা ১৮টি আসনে জয়ী হয়। এই নির্বাচনে দলটির ২২২ জন প্রার্থী ছিলেন।

 

১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত তিনটি আসনে জয়ী হয়। ২০০১ সালের ১ অক্টোবর নির্বাচনে তারা ১৭টি আসন পায়। ওই নির্বাচনে চারটি সংরক্ষিত নারী আসন পায় জামায়াতে ইসলামী। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত দুটি আসনে জয়ী হয়। ওই নির্বাচনে দলটি জোটগতভাবে ৩৯টি এবং চারটিতে এককভাবে নির্বাচন করে।

 

২০১৮ সালের ৮ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন (ইসি) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। ২০০৮ সালের ৪ নভেম্বরে জামায়াতে ইসলামীকে নিবন্ধন দেওয়া হয়েছিল। ২০০৯ সালে হাইকোর্টে করা রিট মামলার রায়ে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হয়। সে কারণে নির্বাচন কমিশন জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে।

 

জামায়াতে ইসলামীর জোরেশোরে নির্বাচন প্রস্তুতি নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে দলটির একজন সিনিয়র নেতা বুধবার যুগান্তরকে বলেন, ‘আমরা বরাবরই নির্বাচনমুখী একটি গণমুখী রাজনৈতিক দল। আপাতত আমরা আমাদের দাবি আদায়ে রাজপথে আছি। পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্তুতিও নিয়ে রাখছি।’ ওই নেতা নিজেও দক্ষিণাঞ্চলের একটি জেলা থেকে আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান।

 

জানা গেছে-ঢাকা, গাজীজপুর, সাভার, কমিল্লা, ময়মনসিংহ, খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুর, চাপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নীলফামারী, বরিশাল, বরগুনা, পটুয়াখালী, পিরোজপুরসহ বিভিন্ন জেলার প্রায় শতাধিক আসনে ইতোমধ্যে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে জামায়াতে ইসলামী। এর আগে বিভিন্ন আসনে জরিপ পরিচালনা করে। জরিপের রিপোর্ট অনুযায়ী দলটির নির্বাচন পরিচালনা কমিটি দেশের বিভিন্ন আসনে প্রার্থী নির্বাচন করতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি জেলায় আসন এবং প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের মাঠে কাজ করারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জানতে চাইলে এ প্রসঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বুধবার যুগান্তরকে বলেন, ‘আমরা একটি নির্বাচনমুখী রাজনৈতিক দল। স্থানীয় সরকার বলেন, আর কেন্দ্রীয় সরকার বলেন-নির্বাচনের মাধ্যমেই আমরা ক্ষমতার রদবদলে বিশ্বাস করি। তাই নির্বাচনের প্রস্তুতি কোনো অস্বাভাবিক বিষয় নয়। এটি অব্যাহত ছিল, আছে, আগামীতেও থাকবে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি দলের একটি রুটিনওয়ার্ক এবং সাংগঠনিক প্রক্রিয়ারই অংশ। তবে একটা কথা পরিষ্কার, আমরা কোনো স্বৈরাচারী এবং দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেব না।

Facebook Comments Box

শেয়ার দিয়ে সাথেই থাকুন

print sharing button
এ বিভাগের অন্যান্য খবর