1. [email protected] : bijoy : bijoy Book
  2. [email protected] : News Room : News Room
  3. [email protected] : news uploader : news uploader
  4. [email protected] : prothombarta :
প্রভাব নেই দেশে বিশ্ববাজারে দাম কমলেও
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৩:০৫ রাত

প্রভাব নেই দেশে বিশ্ববাজারে দাম কমলেও

  • পোষ্ট হয়েছে : বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৩

প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: বিশ্ববাজারে তিনমাস ধরে চিনির দাম নিম্নমুখী। এপ্রিল পর্যন্ত সর্বোচ্চ থাকা র-সুগারের দাম এর মধ্যে দু–এক সপ্তাহ বাড়লেও খুব বেশি অস্থিতিশীল হয়নি। সবমিলে প্রতি টনে প্রায় একশো ডলার কমেছে চিনির দাম। বিশ্ববাজারে কমলেও দেশে দাম কমার পরিবর্তে দফায় দফায় আরও বেড়েছে। বেশি দামে কিনতে কিনতে চিনির স্বাদ রীতিমতো ‘তেতো’ হয়ে উঠছে ভোক্তার কাছে। প্রতি কেজি চিনি কিনতে হচ্ছে ১৪০ টাকায়, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

 

আন্তর্জাতিক বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান বিজনেস ইনসাইডার ও ট্রেডিং ইকোনমিক্সের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত এপ্রিলে বিশ্ববাজারে প্রতি টন চিনি ৬৪৮ ডলারে উঠেছিল। এরপর মে মাসের মাঝামাঝি এসে চিনির দাম কিছুটা কমে ৬২৪ ডলারে নামে। জুনে এসে হয়েছে ৬২০ ডলার। জুন থেকে জুলাইয়ের বর্তমান সময় পর্যন্ত টানা কমে এখন প্রতি টন চিনি ৫৫৯ ডলারে নেমেছে।

 

তবে উল্টো চিত্র দেশের বাজারে। কমা দূরের কথা, এই সময়ে চিনির দাম আরও বেড়েছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদরের তালিকা বলছে, ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা পর্যন্ত। যদিও ক্রেতারা বলছেন, কোথাও কোথাও ১৫০ টাকাও রাখা হচ্ছে খোলা চিনির দাম।

 

আর বাজারে প্যাকেটজাত চিনি এখনো উধাও। গত কোরবানির ঈদের আগে ২২ জুন থেকে চিনির দাম কেজিতে সর্বোচ্চ ২৫ টাকা করে বাড়িয়েছিলেন মিল মালিকরা। ওই সময় প্রতি কেজি খোলা চিনি ১২০ টাকা এবং প্যাকেট চিনি ১২৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

 

ভারত থেকে চিনি রপ্তানি বন্ধ থাকায় বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি চিনি আসছে ব্রাজিল থেকে। ট্রেডিং ইকোনমিক্স বলছে, ব্রাজিলে চলতি মৌসুমে চিনি উৎপাদনে ভালো অগ্রগতির সম্ভাবনায় বিশ্ববাজারে সরবরাহ সংকটের উদ্বেগ কমেছে।

 

এছাড়া বিশ্ববাজারে তেলের দাম কম থাকায় সুইটনার ক্রাশিংয়ের খরচও কমেছে। ভারতীয় উৎপাদকরাও সরবরাহ বাড়িয়েছে বিশ্ববাজারে।

 

একই সময়ে চিনিজাতীয় অন্য পণ্যের মন্থর বৈশ্বিক চাহিদার কারণে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম চিনি আমদানিকারক দেশ চীন তাদের আমদানি কমিয়েছে। সব মিলে চিনির দাম গত তিনমাসব্যাপী নিম্নমুখী।

 

দেশে সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, দেশবন্ধু গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, আব্দুল মোনেম গ্রুপ চিনি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। দাম সমন্বয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের সিনিয়র সহকারী মহাব্যবস্থাপক তসলিম শাহরিয়ার প্রথমবার্তাকে বলেন, চিনির দাম কোথায় কমছে, আমার জানা নেই। বরং বর্তমানে যে দামে চিনি বিক্রি হচ্ছে তাতে আমাদের প্রতি কেজিতে ১০ টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে।

 

তসলিম শাহরিয়ার বলেন, দুই মাস ধরে চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। শুধু ব্রাজিল ছাড়া কেউ চিনি রপ্তানি করছে না। ভারত থেকে চিনি রপ্তানি বন্ধ। ফলে ব্রাজিলের বাজারে অনেক দেশ ভিড় করছে। এখন সেখান থেকে নতুন করে কোনো চিনি আমদানি করা সম্ভব হচ্ছে না। এসব কারণে চিনির দাম বেড়ে যাচ্ছে।

 

বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের তথ্যে (বিটিটিসি), দেশে প্রতি বছর ২২ থেকে ২৪ লাখ টন অপরিশোধিত চিনি ও ৫০ হাজার টন পরিশোধিত চিনি আমদানি হয়। অপরিশোধিত চিনি পরিশোধনের পর বাজারে আসে। দেশের সরকারি চিনিকলগুলোর উৎপাদন রেকর্ড সর্বনিম্নে নেমেছে। ওইসব মিলে দেশে উৎপাদিত চিনির পরিমাণ মাত্র ৩০ হাজার টনের মতো। অর্থাৎ, স্থানীয় চিনির উৎপাদন চাহিদার মাত্র ১ শতাংশ। যে কারণে চিনির বাজার প্রায় পুরোপুরি আমদানির ওপর নির্ভরশীল।

 

এরপরেও স্থানীয় শিল্প সুরক্ষার কথা বলে চিনি আমদানিতে উচ্চ শুল্ক নির্ধারণে দাম বাড়ছে- এমন দাবি করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির কাঁচামালের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন রকম শুল্ক সুবিধা তুলে নেওয়া হয়েছে।

 

এখন বাজার থেকে এক কেজি চিনি কিনে খেতে গেলে ভোক্তাকে ৪২ টাকা শুল্ক দিতে হচ্ছে, যা শুধু স্থানীয় শিল্প সুরক্ষার জন্য। সে কারণে দাম অনেক বাড়ছে। আমাদের কথা শুল্ক কমালে-ই ভোক্তা পর্যায়ে দাম কমবে।

 

এদিকে চিনির দাম নিয়ে বাজারে দীর্ঘদিন ধরে অস্থিরতা চলছে। হু হু করে দাম বাড়ায় ক্রেতার কাছে চিনি অনেকটা ‘তেতো’ হয়ে উঠছে। গত এক বছরে বাংলাদেশে চিনির দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। ২০২২ সালের জুন মাসে চিনির দাম ছিল প্রতি কেজি ৮০ থেকে ৮৪ টাকা।

 

 

ওই সময় থেকে চিনির এই দাম বাড়ার পেছনে ডলার সংকটে এলসি খুলতে না পারা, ডলারের বিনিময় মূল্যবৃদ্ধি এবং আমদানিতে শুল্ক ও আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়াকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এখন পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও সেই সুফল পাচ্ছেন না ক্রেতারা।

 

ট্যারিফ কমিশনের সদস্য শীষ হায়দার চৌধুরী প্রথমবার্তাকে বলেন, চিনির দাম পর্যালোচনায় আমরা আগামী সপ্তাহে কোম্পানিগুলোর সঙ্গে বসবো।

Facebook Comments Box

শেয়ার দিয়ে সাথেই থাকুন

print sharing button
এ বিভাগের অন্যান্য খবর