প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: ঈদের ছুটি শেষে খুলেছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এদিকে সারা দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে। এতে তুলনামূলকভাবে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে আমাদের শিশুরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যে দেখা যায়, দেশে ডেঙ্গুতে এ বছর ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে যার ২৪ শতাংশই শিশু। শিশুদের অবস্থা দ্রুত অবনতি হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তির ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ৮০ শতাংশেরই মৃত্যু হচ্ছে, যা এক কথায় ভয়ের কারণ বলা যায়। এবং যতটা সময় যাচ্ছে সারা দেশের হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে শিশুদের ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে।
সম্প্রতি কয়েক দিন ধরে সারা দেশে বৃষ্টি আবহাওয়া বিরাজ করায় এবং ঈদের ছুটির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ছিল, এর ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন আছে কিনা সেটি চিন্তার বিষয়।
স্কুলের টয়লেট, মাঠে পড়ে থাকা বোতল বা প্লাস্টিকের প্যাকেট, আইসক্রিমের কাপ, ফুলের টব, প্লাস্টিকের গ্লাস ইত্যাদি জায়গায় জমে থাকা পানিতে জন্মাতে পারে এডিস মশা। এ বিষয়ে অভিভাবকদের বাড়তি সচেতনতার প্রয়োজন আছে বলে মনে করছি।
যেমন—
এক. স্কুলে পাঠানোর ক্ষেত্রে শিশুদের স্কুলের ড্রেসে ফুলহাতা শার্ট, ফুলপ্যান্ট ও মোজা পরানো।
দুই. সাধারণ পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে শিশুদের অনুপ্রাণিত করার সঙ্গে সঙ্গে সচেতন করা।
তিন. ব্যবহৃত প্লাস্টিকের কাপ, গ্লাস ও বোতলে কোথাও পানি জমে থাকলে তা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্তৃপক্ষকে জানাতে বলা।
চার. স্কুলরুমে প্রথমসারির দিকে ফাঁকা জায়গা থাকলে পেছনে কোনার দিকে না বসতে উৎসাহিত করা।
পাঁচ. স্কুলের টয়লেটগুলো যাওয়ার আগে সেখানে কোথাও দীর্ঘসময় ধরে পানি জমে আছে কিনা তা খেয়াল করা। এবং পরিষ্কারের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে জানাতে বলা।
এ অবস্থায় অভিভাবকদের পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদেরও শিশুদের সচেতন করতে এগিয়ে আসা জরুরি বলে মনে করি। এর পরও শিশুদের কারও মাঝে জ্বর, মাথাব্যথা, শরীরব্যথা, চোখব্যথা, বমি বমি ভাব কিংবা বমি, খাবারে অরুচি, পেটব্যথা, ডায়রিয়া ইত্যাদি দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেব।
লেখক: ডা. কামরুজ্জামান নাবিল
এমবিবিএস, ইস্পাহান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ইরান