মানুষ চাপে আছে জিনিসপত্রের দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকায়
- পোষ্ট হয়েছে : ০৭:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ জুলাই ২০২৩
- / ৪৩ বার দেখা হয়েছে
প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার দাবি করেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বে খাদ্যশস্যের দাম বাড়লেও সরকার দেশের বাজারে চালের দাম স্থিতিশীল রাখতে সক্ষম হয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বললেন ভিন্ন কথা। তিনি মনে করেন, জিনিসপত্রের দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকায় মানুষ চাপে আছে। তাই সরকার নানামুখী পদক্ষেপের মাধ্যমে মানুষের কষ্ট লাঘবের চেষ্টা করছে।
রোববার রাজধানীর উত্তরায় টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী নিম্ন আয়ের পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে জুলাই মাসের পণ্য বিক্রি কার্যক্রমের উদ্বোধনের সময় দুই মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রথমবারের মতো ফ্যামিলি কার্ডধারীদের ৩০ টাকা কেজি দরে চাল দিচ্ছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। এতে দেশের পাঁচ কোটি মানুষের কষ্ট কমবে বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ ও খাদ্য সচিব মো. ইসমাইল হোসেন বক্তব্য দেন।
টিসিবি সূত্র জানায়, উপকারভোগীদের কাছে আগে প্রতি কেজি ডাল ৭০ টাকা দরে বিক্রি করা হতো। জুলাই মাসের বিক্রি কার্যক্রমে ডালের দাম ১০ টাকা কমিয়ে ৬০ টাকা করা হয়েছে।
এ ছাড়া চিনি ও সয়াবিন তেল আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি চিনির দাম ৭০ টাকা ও সয়াবিন তেলের দাম ১০০ টাকা লিটার। এ ছাড়া ৩০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি করা হবে।
সেক্ষেত্রে একজন কার্ডধারী সর্বোচ্চ ৫ কোজি চাল, দুই কেজি মশুর ডাল, এক কেজি চিনি ও দুই লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল কিনতে পারবে।
বিক্রয় কার্যক্রম অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এখন থেকে টিসিবির কার্ডধারী এক কোটি পরিবার তেল, চিনি, চাল ও ডাল কিনতে পারবেন। এবারই প্রথম ৩০ টাকা কেজি দরে একজন ক্রেতাকে সর্বোচ্চ পাঁচ কেজি চাল দেওয়া হচ্ছে। টিসিবির কার্ডে চাল যুক্ত হওয়ায় এক কোটি পরিবারের পাঁচ কোটি সদস্যের কষ্ট কমবে।
অনুষ্ঠানে জনবান্ধব এ কর্মসূচিতে কোনো অনিয়ম হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, জনবান্ধব এ কর্মসূচিতে অনিয়মের কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। এরপর কোনো অনিয়ম হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনোভাবেই জনবান্ধব এ কর্মসূচিতে অনিয়ম বরদাশত করা হবে না।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, টিসিবির মাধ্যমে চাল বিতরণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুচিন্তার ফল। প্রধানমন্ত্রী চিন্তা করলেন জনসাধারণ টিসিবি থেকে তেল, ডাল, চিনির মতো নিত্যপণ্য সুলভ মূল্যে কিনতে পারে। এর সঙ্গে চাল যুক্ত করলে তাদের আরও সুবিধা হবে। বঙ্গবন্ধুকন্যার সেই জনবান্ধব চিন্তাকে বাস্তব রূপ দেওয়া হলো।
সাধন চন্দ্র মজুমদার আরও বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের পর শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এতে সারা বিশ্বে নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক বাড়ে।
এই অবস্থা থেকে দেশের নিম্ন আয়ের মানুষকে সহযোগিতার জন্য এক কোটি পরিবারের মধ্যে স্বল্পমূল্যের পণ্য বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এছাড়াও সরকারের ওএমএস, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ও জেলেদের জন্য বিশেষ খাদ্য সহায়তা চলমান আছে।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, বছরে প্রায় ৩০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য বিতরণ করা হয়। এর সঙ্গে ১ কোটি টিসিবির কার্ডধারীদের বছরে ৬ লাখ মেট্রিক টন চাল দেওয়া হলে বাজারের ওপর চাপ কমবে, চাল উদ্বৃত্ত থাকবে।
সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য কিনতে পারায় নিম্ন আয়ের মানুষের সুবিধা হবে। দেশে এখন চালের মজুত ভালো। ফলে বাজারে বড় কোনো সংকট নেই।
চালের বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখতে পেরেছি। আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে, বোরোর বাম্পার হয়েছে। চালের বাজার ঠিক রাখার জন্য সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে বলেও জানান খাদ্যমন্ত্রী।