ঢাকা , শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ২ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিস্মিত ইসি যা বললেন এক প্রার্থীর ভোট বর্জনে

  • পোষ্ট হয়েছে : ০৭:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ জুলাই ২০২৩
  • / ১৩ বার দেখা হয়েছে

প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: ঢাকা-১৭ উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে ভোটের পরিবেশ নিয়ে দুই ধরনের মত আছে। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে ভোটের পরিবেশ ‘ভালো’ বলা হচ্ছে। তবে হিরো আলমের অভিযোগ, তার এজেন্টদের বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।

 

সকালে বনানী মডেল স্কুল কেন্দ্র পরিদর্শন গিয়ে একতারা প্রতীকের এই প্রার্থী বলেন, যখনই বলতেছে একতারার লোক, হিরো আলমের লোক, তখনই কিন্তু বের করে দিচ্ছে। এ রকম করে এজেন্ট বের করে দেওয়ার মানে হলো- একতরফা তাদের এজেন্ট দিয়ে সিল মারার চেষ্টা করছে তারা।

 

এদিকে অনিয়ম ও নির্বাচন কমিশনের অসহযোগিতার অভিযোগে দুপুরে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন স্বতন্ত্র প্রার্থী তারেকুল ইসলাম ভুঞা। প্রশাসন তার লোক ঢুকতে দিচ্ছে না অভিযোগ করে তিনি বলেন, এ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন কোনোভাবেই সম্ভব নয়। বিএনপি এবং সরকারবিরোধী দলের এতদিনের করা অভিযোগই সত্য প্রমাণ হলো।

 

স্বতন্ত্র প্রার্থী তারেকুল বলেন, আমি ভোটের কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ালাম। নির্বাচন বর্জন করলাম।

 

ভোট বর্জনের এ ঘোষণায় নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন, গণমাধ্যমে দেখলাম। সত্যতা যাচাই করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এত অল্প সময়ে কেনো বর্জন করলেন বুঝতে পারলাম না। দিনের শুরুতেই যদি বলেন ন্যায্যতা পাচ্ছি না, এটা তো মুশকিল। ৪টা পর্যন্ত দেখতে পারতেন।

 

বিএনপি ও সমমনাদের বর্জনের মধ্যে ভোটার উপস্থিতি কম হলেও কোনো অনিয়ম, অভিযোগ ছাড়াই ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে ভোট হচ্ছে বলে দাবি করেছেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা। সকাল ৮টায় ভোট শুরু হলে বনানী বিদ্যানিকেতন কেন্দ্র পরিদর্শনে যান রাশেদা। তখনও সব এজেন্ট এসে পৌঁছাননি, ভোটারও কেবল আসতে শুরু করেছে।

 

দুপুরে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, পরিবেশ ভালো। এজেন্টদের সঙ্গে কথা বলেছি। ভোটারদের বাধা দেওয়া, প্রতিবন্ধকতা ছিল না। সিসি ক্যামেরায়ও ভোটের কোনো অনিয়ম দেখিনি। কোনো অভিযোগও কেউ দেয়নি।

 

তিনি বলেন, আমার ব্যক্তিগত ধারণা, স্বল্প সময়ের মেয়াদ আছে সংসদের, এজন্য ভোটারদের আগ্রহ কম হতে পারে। আর অভিজাত এলাকায় অনেকে হয়ত এ ভোট নিয়ে অতটা আগ্রহী নাও হতে পারে। টিপটিপ বৃষ্টি হচ্ছিল সকালে, এজন্য হয়ত সকালে আসেননি অনেকে; বিকালে আরও বাড়তে পারে। দেখা যাক, কী হয়; কত শতাংশ ভোট পড়ে।

 

কেএম নুরুল হুদা কমিশনের সময় ২০২০ সালের মার্চে করোনাভাইরাস সংক্রমণ আতঙ্কের মধ্যে ঢাকা-১০ উপনির্বাচনে ইভিএমে মাত্র ৫.২৮ শতাংশ ভোট পড়ার নজির রয়েছে।

 

ঢাকা-১৭ আসনের পাশাপাশি একই দিন যশোরের বেনাপোল ও পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া পৌরসভাতেও ভোট হচ্ছে। সেখানে কয়েকটি সিসি ক্যামেরা নষ্ট ও উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে কথা বলেছেন আরেক নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান।

 

তিনি বলেন, সুষ্ঠু ভোটের জন্য ইসির আন্তরিকতার ঘাটতি নেই। ঢাকায় ব্যালট পেপারের পাশাপাশি বেনাপোল ও ভান্ডারিয়া পৌরসভায় ইভিএমে ভালো নির্বাচন হচ্ছে।

 

তবে ভাণ্ডারিয়া পৌরসভায় কয়েকজন দুষ্কৃতকারী চার-পাঁচটি কেন্দ্রের সিসি ক্যামেরার কেবল কেটে ফেলেছে রোববার রাতে। সকালের মধ্যে তিনটা মেরামত করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে ইসির আলাদা অবজারভার রাখা হয়েছে। প্রকৃত দোষীদর চিহ্নিত করা হবে।

 

এ নির্বাচনকে ঘিরে স্থানীয় সাংবাদিকদের ‘হুমকি দেওয়ায়’ উপজেলা চেয়ারম্যানের আচরণের জন্য ভোট শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি। ঢাকায় ভোটকেন্দ্রে একজন সাংবাদিকের মোবাইল ফোন নিয়ে ‘হয়রানির ঘটনায়’ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসও দেন এই নির্বাচন কমিশনার।

ট্যাগ :

শেয়ার দিয়ে সাথেই থাকুন

বিস্মিত ইসি যা বললেন এক প্রার্থীর ভোট বর্জনে

পোষ্ট হয়েছে : ০৭:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ জুলাই ২০২৩

প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: ঢাকা-১৭ উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে ভোটের পরিবেশ নিয়ে দুই ধরনের মত আছে। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে ভোটের পরিবেশ ‘ভালো’ বলা হচ্ছে। তবে হিরো আলমের অভিযোগ, তার এজেন্টদের বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।

 

সকালে বনানী মডেল স্কুল কেন্দ্র পরিদর্শন গিয়ে একতারা প্রতীকের এই প্রার্থী বলেন, যখনই বলতেছে একতারার লোক, হিরো আলমের লোক, তখনই কিন্তু বের করে দিচ্ছে। এ রকম করে এজেন্ট বের করে দেওয়ার মানে হলো- একতরফা তাদের এজেন্ট দিয়ে সিল মারার চেষ্টা করছে তারা।

 

এদিকে অনিয়ম ও নির্বাচন কমিশনের অসহযোগিতার অভিযোগে দুপুরে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন স্বতন্ত্র প্রার্থী তারেকুল ইসলাম ভুঞা। প্রশাসন তার লোক ঢুকতে দিচ্ছে না অভিযোগ করে তিনি বলেন, এ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন কোনোভাবেই সম্ভব নয়। বিএনপি এবং সরকারবিরোধী দলের এতদিনের করা অভিযোগই সত্য প্রমাণ হলো।

 

স্বতন্ত্র প্রার্থী তারেকুল বলেন, আমি ভোটের কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ালাম। নির্বাচন বর্জন করলাম।

 

ভোট বর্জনের এ ঘোষণায় নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন, গণমাধ্যমে দেখলাম। সত্যতা যাচাই করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এত অল্প সময়ে কেনো বর্জন করলেন বুঝতে পারলাম না। দিনের শুরুতেই যদি বলেন ন্যায্যতা পাচ্ছি না, এটা তো মুশকিল। ৪টা পর্যন্ত দেখতে পারতেন।

 

বিএনপি ও সমমনাদের বর্জনের মধ্যে ভোটার উপস্থিতি কম হলেও কোনো অনিয়ম, অভিযোগ ছাড়াই ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে ভোট হচ্ছে বলে দাবি করেছেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা। সকাল ৮টায় ভোট শুরু হলে বনানী বিদ্যানিকেতন কেন্দ্র পরিদর্শনে যান রাশেদা। তখনও সব এজেন্ট এসে পৌঁছাননি, ভোটারও কেবল আসতে শুরু করেছে।

 

দুপুরে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, পরিবেশ ভালো। এজেন্টদের সঙ্গে কথা বলেছি। ভোটারদের বাধা দেওয়া, প্রতিবন্ধকতা ছিল না। সিসি ক্যামেরায়ও ভোটের কোনো অনিয়ম দেখিনি। কোনো অভিযোগও কেউ দেয়নি।

 

তিনি বলেন, আমার ব্যক্তিগত ধারণা, স্বল্প সময়ের মেয়াদ আছে সংসদের, এজন্য ভোটারদের আগ্রহ কম হতে পারে। আর অভিজাত এলাকায় অনেকে হয়ত এ ভোট নিয়ে অতটা আগ্রহী নাও হতে পারে। টিপটিপ বৃষ্টি হচ্ছিল সকালে, এজন্য হয়ত সকালে আসেননি অনেকে; বিকালে আরও বাড়তে পারে। দেখা যাক, কী হয়; কত শতাংশ ভোট পড়ে।

 

কেএম নুরুল হুদা কমিশনের সময় ২০২০ সালের মার্চে করোনাভাইরাস সংক্রমণ আতঙ্কের মধ্যে ঢাকা-১০ উপনির্বাচনে ইভিএমে মাত্র ৫.২৮ শতাংশ ভোট পড়ার নজির রয়েছে।

 

ঢাকা-১৭ আসনের পাশাপাশি একই দিন যশোরের বেনাপোল ও পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া পৌরসভাতেও ভোট হচ্ছে। সেখানে কয়েকটি সিসি ক্যামেরা নষ্ট ও উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে কথা বলেছেন আরেক নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান।

 

তিনি বলেন, সুষ্ঠু ভোটের জন্য ইসির আন্তরিকতার ঘাটতি নেই। ঢাকায় ব্যালট পেপারের পাশাপাশি বেনাপোল ও ভান্ডারিয়া পৌরসভায় ইভিএমে ভালো নির্বাচন হচ্ছে।

 

তবে ভাণ্ডারিয়া পৌরসভায় কয়েকজন দুষ্কৃতকারী চার-পাঁচটি কেন্দ্রের সিসি ক্যামেরার কেবল কেটে ফেলেছে রোববার রাতে। সকালের মধ্যে তিনটা মেরামত করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে ইসির আলাদা অবজারভার রাখা হয়েছে। প্রকৃত দোষীদর চিহ্নিত করা হবে।

 

এ নির্বাচনকে ঘিরে স্থানীয় সাংবাদিকদের ‘হুমকি দেওয়ায়’ উপজেলা চেয়ারম্যানের আচরণের জন্য ভোট শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি। ঢাকায় ভোটকেন্দ্রে একজন সাংবাদিকের মোবাইল ফোন নিয়ে ‘হয়রানির ঘটনায়’ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসও দেন এই নির্বাচন কমিশনার।