1. [email protected] : bijoy : bijoy Book
  2. [email protected] : News Room : News Room
  3. [email protected] : news uploader : news uploader
  4. [email protected] : prothombarta :
এখলাসকে হত্যায় ২০ লাখ টাকায় খুনি ভাড়া করেন লেদার মনির
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৮:০৭ রাত

এখলাসকে হত্যায় ২০ লাখ টাকায় খুনি ভাড়া করেন লেদার মনির

  • পোষ্ট হয়েছে : শনিবার, ২২ জুলাই, ২০২৩

প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: রাজধানীর হাজারীবাগের জমি ব্যবসায়ী এখলাস হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী লেদার মনিরসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গত বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিবি বলছে, কামরাঙ্গীরচরের একটি জমি সংক্রান্ত বিরোধ থেকে ২০ লাখ টাকা চুক্তিতে ভাড়াটে খুনি দিয়ে এখলাসকে হত্যা করা হয়। আর এতে ব্যবহার করা হয় ‘কাটআউট’ পদ্ধতি। এই ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন লেদার মনির। এক সময় হাজারীবাগ এলাকায় ২০ টাকা দিনমজুর হিসেবে ট্যানারির চামড়া পরিষ্কার করতেন মনির। এখন হাজারীবাগে চারটি ট্যানারির মালিক তিনি। এ ছাড়া মনির অস্ত্র ব্যবসা থেকে বিভিন্ন অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য প্রমাণ পেয়েছে তদন্তকারীরা।

আজ শনিবার দুপুরে মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন আর রশীদ এসব তথ্য জানান।

তিনি জানান, এখলাসকে খুনের জন্য উপযুক্ত সময় হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল ঈদুল আজহার আগের রাত। সেই রাতে বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন জমি ব্যবসায়ী এখলাস। নিখোঁজের দুদিনের মাথায় কামরাঙ্গীরচর বেড়িবাঁধ থেকে তাঁর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়। এখলাস খুনের পর এ ঘটনায় ১ জুলাই কামরাঙ্গীরচর থানায় একটি মামলা হয়। এই ঘটনায় পর্যায়ক্রমে মূল পরিকল্পনাকারী মনির হোসেন ওরফে লেদার মনির ওরফে কোম্পানি মনিরসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

ডিবি প্রধান জানান, এ হত্যাকাণ্ডে নিজের সম্পৃক্ততা এড়াতে মনির জঙ্গিদের মতো ‘কাটআউট’ পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন। দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

ডিবি প্রধান বলেন, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ গত ২০ জুলাই থাইল্যান্ড থেকে আকাশ পথে ঢাকায় ফেরত আসার পর বিমানবন্দর এলাকা থেকে পাসপোর্টসহ গ্রেপ্তার করে হত্যায় জড়িত ঝন্টু মোল্লাকে। তিনি মূলত কোম্পানি মনিরের ক্যাশিয়ার। তিনি ৪ দিনের পুলিশ রিমান্ডে আছেন। তাঁর দেওয়া তথ্যমতে ডিবি এলিফ্যান্ট রোড ও কেরানীগঞ্জে অভিযান চালিয়ে এখলাসকে হত্যাকারী আ. রহমান ওরফে রহমান কাল্লুকে এবং সমন্বয়কারী মো. এসহাককে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়া ডিবির অপর দুইটি টিম মাগুরা জেলায় এবং যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানা এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে হত্যায় জড়িত ফয়সাল এবং মূল পরিকল্পনাকারী মনিরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গ্রেপ্তারের সময় মনিরের কাছ থেকে দুটি বাংলাদেশি পাসপোর্ট, একটি মোবাইল, ২২ হাজার বাংলাদেশি টাকা আর ৫ হাজার ইন্ডিয়ান রুপি জব্দ করা হয়। মনিরের পাসপোর্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায় গত ১৫ জুলাই সকালে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর দিয়ে তিনি কলকাতায় পালিয়ে যান। পরে অবৈধভাবে দেশে ঢুকলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

কেন এ হত্যাকান্ড

ডিব জানায়, হাজারীবাগ ও সাভার এলাকায় একাধিক ট্যানারি কারখানার মালিক কোম্পানি মনির একজন ভূমিদস্যূ এবং দালালও। বিভিন্ন সময়ে তিনি নিহত এখলাসকে দিয়ে জায়গা দখল এবং ক্রয়-বিক্রয়ের কাজ করিয়েছেন। কামরাঙ্গীরচর থানাধীন সিএস ২২ দাগের একটা বড় জমিতে এখলাসের ৪০ শতক জায়গা আছে। যার অধিগ্রহণ মূল্য প্রায় শত কোটি টাকা। কোম্পানি মনির এই জায়গাটি নিজের দখলে নিয়ে সমুদয় অধিগ্রহণ মূল্য গ্রাস করতে চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। এই চেষ্টা রোধ করতে এখলাস একাধিক মামলা দায়েরসহ ঢাকা জেলা প্রশাসকের কাছে বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন। নানা ফন্দি ফিকির করে ব্যর্থ হয়ে কোম্পানি মনির এই হত্যার পথ বেছে নেন।

কে এই মনির

ডিবির তদন্তে উঠে এসেছে, নোয়াখালীর এক দিনমজুর আ. রহিমের ছেলে এই মনির হোসেন। আব্দুর রহিম হাজারীবাগের ট্যানারি কারখানায় দিনমজুরের কাজ করতেন ৭০ দশকে। ১৯৮০ বা ৮২ সালে পিতা আব্দুর রহিমের সঙ্গে মনির হোসেন ট্যানারি কারখানায় অবস্থান করে চামড়ার ময়লা পরিষ্কারের কাজ নেন। পরবর্তীতে শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের পৃষ্ঠপোষকতায় নিজেই কেনাবেচা শুরু করেন কাঁচা চামড়া। সঙ্গে শুরু করেন ভূমি দখল ও ভূমির ব্যবসা। এভাবেই শূন্য থেকে তিনি হয়ে ওঠেন চার-পাঁচটি ট্যানারি এবং শত শত কোটি টাকার মালিক। ২০০২ সালে সিকদার পেট্রোল পাম্পের সামনে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করা হয় রুহুল আমিন নামে এক ব্যক্তিকে। রুহুল আমিন হত্যা মামলায় অন্যতম আসামি এই লেদার মনির। ২০১৫ সালে ইফতারির পূর্ব মুহূর্তে জসিম ওরফে গুন্ডা জসিম নামক একজনকে হাজারীবাগ বাজারের মধ্যে শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের বাহিনী দিয়ে গুলি করে নৃশংসভাবে হত্যা করান তিনি। টাকা এবং প্রভাবশালীদের তদবিরে তিনি বিভিন্ন সময়ে ছাড়া পেয়ে যেতেন।

Facebook Comments Box

শেয়ার দিয়ে সাথেই থাকুন

print sharing button
এ বিভাগের অন্যান্য খবর