ঢাকা , শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জামায়াত-শিবির তাণ্ডব চালিয়েছে সাঈদীর মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স ঘিরে

  • পোষ্ট হয়েছে : ০২:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৩
  • / ৪৬ বার দেখা হয়েছে

প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স ঘিরে সোমবার (১৪ আগস্ট) দিনগত রাতে জামায়াত-শিবির তাণ্ডব চালিয়ে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।

 

মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যু এবং তৎপরবর্তীতে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত বিষয় তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

 

ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী সোমবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে মারা যান। তার মরদেহ নিয়ে জামায়াত-শিবির সোমবার রাতে তাণ্ডব চালিয়েছে। পুলিশের ওপর আক্রমণ করে। গাড়ি ভাঙচুর করে বেশ কয়েকজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তাদের ওপর হামলা করে।

 

ফজরের নামাজের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) দখল করে নেয়। ফেসবুকে লাইভ দিলো সবাই এখানে চলে আসো। পরে বাধ্য হয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষা করার জন্য সীমিত শক্তি প্রয়োগ করা হয়।

 

সোমবার রাতের হামলা ও ভাঙচুরের বিষয়টি বিবেচনা করে বুধবার (১৬ আগস্ট) গায়েবানা জানাজার নামাজের অনুমতি দেওয়া হবে না হলেও জানান ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।

 

খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, বিএসএমএমইউ সোমবার রাত ৮ টা ৪০ মিনিটে মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী হার্ট অ্যাটাকে মারা যান।

 

সারারাতে তার মরদেহ হস্তান্তরকে কেন্দ্র করে জামায়াত-শিবির ও তার স্বজনরা নাটক করেছে এবং তাণ্ডব চালিয়েছে। তিনি মারা যাওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তার দুই ছেলেকে জানায়।

 

পরে তার দুই ছেলে মরদেহ পিরোজপুর নেওয়ার জন্য কারাগার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। এর মধ্যে জেল কর্তৃপক্ষ পক্ষ মরদেহের ময়নাতদন্ত করার প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করে। সেই অনুসারে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে আসা হয়।

 

ম্যাজিস্ট্রেট এসে মরদেহের সুরতহাল সম্পূর্ণ করেন। যখন ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিকেল নিয়ে যাওয়া হবে সেই মুহূর্তে তার ছেলেরা জোর দাবি জানায়, তারা ময়নাতদন্ত ছাড়া মরদেহ নিয়ে যেতে চান। এ বিষয়ে জেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের অনেক সময়ক্ষেপণ হয়। পরে রাত একটা/দেড়টার দিকে তারা জেল কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পায়।

 

 

তিনি বলেন, এর পর মরদেহের গোসল শেষে পরিবার প্রস্তুতি নেয় মরদেহ পিরোজপুর নিয়ে যাবে। তখন বিএসএমএমইউ ও শাহবাগে আগে থেকে অবস্থান নেওয়া কয়েক হাজার জামায়াত-শিবির কর্মী দাবি তুলে জানাজার নামাজ পড়ে মরদেহ নিতে চাই।

 

তখন আমরা তাদের বলি আপনারা এখানে জানাজা নামাজ পড়তে পারেন। আমরা তাদের বলি আগামীকাল জাতীয় শোক দিবস আমাদের ব্যস্ততা আছে, আপনারা এখন জানাজা নামাজ পড়ে মরদেহ নিয়ে যেতে পারেন।

 

রাত সোয়া ২টার দিকে তারা জানাজার নামাজের পরিবর্তে মোনাজাত করে আধা ঘণ্টা। তারা বলে আমরা জানাজা নামাজ পড়বো না মোনাজাত করেছি, পরে আমরা গায়েবানা জানাজা নামাজ পড়বো। এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়ে তারা মোনাজাত করেন।

 

কিন্তু যখন মরদেহ গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া শুরু হয়, তখন হাজার হাজার জামায়াত-শিবির নেতাকর্মী মরদেহবাহী গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন। তারা কোনো মতে এ মরদেহ পিরোজপুরে নিয়ে যেতে দেবেন না।

 

এসময় মরদেহবাহী গাড়ির সঙ্গে থাকা পুলিশ অফিসার ও সদস্যদের ওপর হামলা করে জামায়াত-শিবির। এবং গাড়ি ভাঙচুরও শুরু করে তারা। এ হামলায় ডিসি রমনাসহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র অফিসার আহত হন।

 

তারা পুলিশের ৪ থেকে ৫ টি গাড়ি ভাঙচুর করে এবং দু’টি মোটরসাইকেল আগুন ধরিয়ে দেয়। আমরা ধৈর্যসহকারে এ তাণ্ডব সহ্য করি। তার পরেও আমরা কোনো শক্তি প্রয়োগ করেনি।

 

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ফজরের নামাজের পরে তাদের আবারও অনুমতি দেওয়া হলো জানাজা নামাজ পড়ার। কিন্তু ফজরের নামাজের পরে তারা আমাদের অফিসারদের বের করে দিয়ে বিএসএমএমইউ দখলে নেয়।

 

তারা মরদেহ পিরোজপুর নিতে দেবে না। এরপর ফেসবুক তারা প্রচার শুরু করলো সারাদেশ থেকে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের শাহবাগে জরো হওয়ার জন্য। তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাধ্য হয়ে অত্যন্ত সীমিত আকারে শক্তি প্রয়োগ করি।

 

আমরা কিছু টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করি। এরপর সাঈদীর মরদেহ পিরোজপুর পাঠানোর ব্যবস্থা করি। কারণ হাসপাতালে অনেক রোগী ছিল, এ জন্য পুলিশ অত্যন্ত ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। এরই মধ্যে মরদেহ পিরোজপুরে পৌঁছেছে, দাফন কাজ সম্পূর্ণ করার প্রক্রিয়া চলমান আছে।

 

পরিস্থিতি যে এমন ভয়াবহ হবে পুলিশ তা আগে কেন জানিতে পারেনি, এইটা গোয়েন্দা ব্যর্থতা কিনা জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমরা গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছিলাম জামায়াত- শিবিরের নেতাকর্মীরা জড়ো হচ্ছেন।

 

সাঈদীর দুই ছেলে প্রথম থেকে আমাদের আশ্বস্ত করেছিল বাবার মরদেহ নিয়ে কোনো ধরনের সমস্যা হবে না। আমরা তাদের ওপর বিশ্বাস করে প্রথম থেকে কোনো ধরনের শক্তি প্রয়োগ করিনি।

 

যেহেতু তারা তাদের নেতার মরদহ নিয়ে যাওয়ার জন্য কেউ বা মৃত্যুর সংবাদ শুনে আবার অনেকে মরদেহ দেখার জন্য এসেছেন। তাই মানবিক কারণে আমরা প্রথম থেকে কোনো ধরনের অ্যাকশন নেইনি।

 

এর আগে গুজব ছড়ানো হয়েছে সাঈদীকে চাঁদে দেখা গেছে। তেমনি আগামীকালের ভূমিকম্প নিয়ে সারাদেশে গুজব ছড়ানো হয়েছে এ ক্ষেত্রে ডিএমপির সাইবার সেল সক্রিয় আছে কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমাদের সাইবার ইউনিট সক্রিয় আছে।

 

তারা যে বিভিন্ন গুজব ছড়াচ্ছিল সেই তত্ত্ব আমরা প্রতিনিয়ত পাচ্ছিলাম। এছাড়া সারাদেশ থেকে নেতাকর্মীদের জোর হওয়ার বিষয়ে যেসব প্রচারণা ফেসবুকে ছড়িয়েছিল সেইসব তথ্যও আমরা পাচ্ছিলাম।

 

সেই প্রেক্ষাপটে ভোররাতে আমাদের হালকা শক্তি প্রয়োগ করে তাদের ছাত্রভঙ্গ করতে হয়েছে। কারণ সাইবার ওয়ার্ল্ডে তারা যেভাবে তৎপর ছিল আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য আসে যে তারা সারাদেশ থেকে নেতাকর্মীদের জোর করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে।

 

আগামীকাল জামায়াত-শিবির গায়েবানা জানাজার নামাজ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। এ গায়েবানা জানাজার নামাজকে কেন্দ্র করে ডিএমপির কোনো প্রস্তুতি আছে কি না আর গোয়েন্দা তথ্য আছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, তারা গতকাল রাতে যে তাণ্ডব চালিয়েছে, তারপরে আগামীকাল গায়েবানা জানাজার অনুমতি দেওয়া হবে না। আমরা তাদের অনুমতি দেবো না।

ট্যাগ :

শেয়ার দিয়ে সাথেই থাকুন

জামায়াত-শিবির তাণ্ডব চালিয়েছে সাঈদীর মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স ঘিরে

পোষ্ট হয়েছে : ০২:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৩

প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স ঘিরে সোমবার (১৪ আগস্ট) দিনগত রাতে জামায়াত-শিবির তাণ্ডব চালিয়ে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।

 

মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যু এবং তৎপরবর্তীতে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত বিষয় তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

 

ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী সোমবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে মারা যান। তার মরদেহ নিয়ে জামায়াত-শিবির সোমবার রাতে তাণ্ডব চালিয়েছে। পুলিশের ওপর আক্রমণ করে। গাড়ি ভাঙচুর করে বেশ কয়েকজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তাদের ওপর হামলা করে।

 

ফজরের নামাজের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) দখল করে নেয়। ফেসবুকে লাইভ দিলো সবাই এখানে চলে আসো। পরে বাধ্য হয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষা করার জন্য সীমিত শক্তি প্রয়োগ করা হয়।

 

সোমবার রাতের হামলা ও ভাঙচুরের বিষয়টি বিবেচনা করে বুধবার (১৬ আগস্ট) গায়েবানা জানাজার নামাজের অনুমতি দেওয়া হবে না হলেও জানান ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।

 

খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, বিএসএমএমইউ সোমবার রাত ৮ টা ৪০ মিনিটে মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী হার্ট অ্যাটাকে মারা যান।

 

সারারাতে তার মরদেহ হস্তান্তরকে কেন্দ্র করে জামায়াত-শিবির ও তার স্বজনরা নাটক করেছে এবং তাণ্ডব চালিয়েছে। তিনি মারা যাওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তার দুই ছেলেকে জানায়।

 

পরে তার দুই ছেলে মরদেহ পিরোজপুর নেওয়ার জন্য কারাগার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। এর মধ্যে জেল কর্তৃপক্ষ পক্ষ মরদেহের ময়নাতদন্ত করার প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করে। সেই অনুসারে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে আসা হয়।

 

ম্যাজিস্ট্রেট এসে মরদেহের সুরতহাল সম্পূর্ণ করেন। যখন ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিকেল নিয়ে যাওয়া হবে সেই মুহূর্তে তার ছেলেরা জোর দাবি জানায়, তারা ময়নাতদন্ত ছাড়া মরদেহ নিয়ে যেতে চান। এ বিষয়ে জেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের অনেক সময়ক্ষেপণ হয়। পরে রাত একটা/দেড়টার দিকে তারা জেল কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পায়।

 

 

তিনি বলেন, এর পর মরদেহের গোসল শেষে পরিবার প্রস্তুতি নেয় মরদেহ পিরোজপুর নিয়ে যাবে। তখন বিএসএমএমইউ ও শাহবাগে আগে থেকে অবস্থান নেওয়া কয়েক হাজার জামায়াত-শিবির কর্মী দাবি তুলে জানাজার নামাজ পড়ে মরদেহ নিতে চাই।

 

তখন আমরা তাদের বলি আপনারা এখানে জানাজা নামাজ পড়তে পারেন। আমরা তাদের বলি আগামীকাল জাতীয় শোক দিবস আমাদের ব্যস্ততা আছে, আপনারা এখন জানাজা নামাজ পড়ে মরদেহ নিয়ে যেতে পারেন।

 

রাত সোয়া ২টার দিকে তারা জানাজার নামাজের পরিবর্তে মোনাজাত করে আধা ঘণ্টা। তারা বলে আমরা জানাজা নামাজ পড়বো না মোনাজাত করেছি, পরে আমরা গায়েবানা জানাজা নামাজ পড়বো। এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়ে তারা মোনাজাত করেন।

 

কিন্তু যখন মরদেহ গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া শুরু হয়, তখন হাজার হাজার জামায়াত-শিবির নেতাকর্মী মরদেহবাহী গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন। তারা কোনো মতে এ মরদেহ পিরোজপুরে নিয়ে যেতে দেবেন না।

 

এসময় মরদেহবাহী গাড়ির সঙ্গে থাকা পুলিশ অফিসার ও সদস্যদের ওপর হামলা করে জামায়াত-শিবির। এবং গাড়ি ভাঙচুরও শুরু করে তারা। এ হামলায় ডিসি রমনাসহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র অফিসার আহত হন।

 

তারা পুলিশের ৪ থেকে ৫ টি গাড়ি ভাঙচুর করে এবং দু’টি মোটরসাইকেল আগুন ধরিয়ে দেয়। আমরা ধৈর্যসহকারে এ তাণ্ডব সহ্য করি। তার পরেও আমরা কোনো শক্তি প্রয়োগ করেনি।

 

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ফজরের নামাজের পরে তাদের আবারও অনুমতি দেওয়া হলো জানাজা নামাজ পড়ার। কিন্তু ফজরের নামাজের পরে তারা আমাদের অফিসারদের বের করে দিয়ে বিএসএমএমইউ দখলে নেয়।

 

তারা মরদেহ পিরোজপুর নিতে দেবে না। এরপর ফেসবুক তারা প্রচার শুরু করলো সারাদেশ থেকে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের শাহবাগে জরো হওয়ার জন্য। তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাধ্য হয়ে অত্যন্ত সীমিত আকারে শক্তি প্রয়োগ করি।

 

আমরা কিছু টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করি। এরপর সাঈদীর মরদেহ পিরোজপুর পাঠানোর ব্যবস্থা করি। কারণ হাসপাতালে অনেক রোগী ছিল, এ জন্য পুলিশ অত্যন্ত ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। এরই মধ্যে মরদেহ পিরোজপুরে পৌঁছেছে, দাফন কাজ সম্পূর্ণ করার প্রক্রিয়া চলমান আছে।

 

পরিস্থিতি যে এমন ভয়াবহ হবে পুলিশ তা আগে কেন জানিতে পারেনি, এইটা গোয়েন্দা ব্যর্থতা কিনা জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমরা গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছিলাম জামায়াত- শিবিরের নেতাকর্মীরা জড়ো হচ্ছেন।

 

সাঈদীর দুই ছেলে প্রথম থেকে আমাদের আশ্বস্ত করেছিল বাবার মরদেহ নিয়ে কোনো ধরনের সমস্যা হবে না। আমরা তাদের ওপর বিশ্বাস করে প্রথম থেকে কোনো ধরনের শক্তি প্রয়োগ করিনি।

 

যেহেতু তারা তাদের নেতার মরদহ নিয়ে যাওয়ার জন্য কেউ বা মৃত্যুর সংবাদ শুনে আবার অনেকে মরদেহ দেখার জন্য এসেছেন। তাই মানবিক কারণে আমরা প্রথম থেকে কোনো ধরনের অ্যাকশন নেইনি।

 

এর আগে গুজব ছড়ানো হয়েছে সাঈদীকে চাঁদে দেখা গেছে। তেমনি আগামীকালের ভূমিকম্প নিয়ে সারাদেশে গুজব ছড়ানো হয়েছে এ ক্ষেত্রে ডিএমপির সাইবার সেল সক্রিয় আছে কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমাদের সাইবার ইউনিট সক্রিয় আছে।

 

তারা যে বিভিন্ন গুজব ছড়াচ্ছিল সেই তত্ত্ব আমরা প্রতিনিয়ত পাচ্ছিলাম। এছাড়া সারাদেশ থেকে নেতাকর্মীদের জোর হওয়ার বিষয়ে যেসব প্রচারণা ফেসবুকে ছড়িয়েছিল সেইসব তথ্যও আমরা পাচ্ছিলাম।

 

সেই প্রেক্ষাপটে ভোররাতে আমাদের হালকা শক্তি প্রয়োগ করে তাদের ছাত্রভঙ্গ করতে হয়েছে। কারণ সাইবার ওয়ার্ল্ডে তারা যেভাবে তৎপর ছিল আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য আসে যে তারা সারাদেশ থেকে নেতাকর্মীদের জোর করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে।

 

আগামীকাল জামায়াত-শিবির গায়েবানা জানাজার নামাজ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। এ গায়েবানা জানাজার নামাজকে কেন্দ্র করে ডিএমপির কোনো প্রস্তুতি আছে কি না আর গোয়েন্দা তথ্য আছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, তারা গতকাল রাতে যে তাণ্ডব চালিয়েছে, তারপরে আগামীকাল গায়েবানা জানাজার অনুমতি দেওয়া হবে না। আমরা তাদের অনুমতি দেবো না।