জড়ো হচ্ছেন নয়াপল্টনে, ঢাকায় ঢুকছেন যে যেভাবে পারছেন
- পোষ্ট হয়েছে : ০৭:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৩
- / ৫৭ বার দেখা হয়েছে
প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: নিষেধ সত্ত্বেও রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হচ্ছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জটলা করে বিশৃঙ্খলা করা যাবে না মর্মে নেতাকর্মীদের সেখানে ভিড় জমাতে নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু নিষেধ সত্ত্বেও জড়ো হচ্ছেন নেতাকর্মীরা।
বিএনপির এমন নির্দেশনা দেওয়া হলেও তা কানে তুলেছেন না নেতাকর্মীরা। দলের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে স্লোগান দিচ্ছেন নেতাকর্মীরা।
শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) জুমার নামাজের পর থেকেই মূলত সেখানে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা মো. আব্বাস আলী হ্যান্ড বাইক নিয়ে তাদের নির্দেশনা প্রচার করছেন। কিন্তু তাতে খুব কাজ হচ্ছে না। সড়কে যেন যানবাহন চলাচল বন্ধ না হয় সে বিষয়টি খেয়াল রাখার জন্য নেতাকর্মীদের মাইকে বলা হচ্ছে।
শুক্রবার আসরের আজানের সময় নয়াপল্টনে অন্তত ৪০০/৫০০ নেতাকর্মীর উপস্থিত রয়েছে। সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। বাড়তি নিরাপত্তায় বৈদ্যুতিক খুঁটিতে স্থাপন করা হয়েছে ক্যামেরা।
বিএনপি কার্যালয়ের বিপরীত সড়কে থেমে থেমে রিকশাচালকরা বিএনপির মহাসমাবেশের পক্ষে সরকারবিরোধী স্লোগান দিচ্ছেন।
কথা হলে কুতুবদিয়া উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম প্রথমবার্তাকে বলেন, আমরা ঢাকার বাইরে থেকে দূর-দূরান্ত থেকে এসেছি আমাদের কর্মসূচি সফল করতে। আমাদের যাওয়ার অন্য কোনো জায়গা নেই, তাই নয়াপল্টনে অবস্থান করছি। গ্রেফতার হলেও আমরা এখানে অবস্থান করবো। বিজয় অর্জন না করে ঘরে ফিরবো না।
কিশোরগঞ্জ থেকে সবজি বিক্রেতা সেজে আসা মালেক বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সবজি নিয়ে ঢাকায় আসছি। কারওয়ান বাজারে সেগুলো বিক্রি করে রাতে সেখানেই ছিলাম। সকালে আশপাশে ঘুরেছি। এখন লোক জমছে দেখে অফিসের (বিএনপির কার্যালয়ের) সামনে আসছি।
দলীয় কোন পদ পদবি না থাকলেও কেবল সমর্থন জানাতে একই পদ্ধতিতে গত বছর ১০ ডিসেম্বরও ঢাকায় প্রবেশ করেছিলেন জানিয়ে বিএনপির এ কর্মী বলেন, ‘দেশের অবস্থা ভালো না। মানুষের মধ্যে শান্তি নেই। জিনিসপত্রের দামে সাধারণ মানুষ দিশেহারা। এ সরকার গেলে যদি সব ঠিক হয়।’
অন্যদিকে, ভিসা-পাসপোর্ট সঙ্গে নিয়ে সিলেট থেকে এসেছেন আব্দুল জলিল। কিছুদিনের মধ্যে আবারও প্রবাসে ফিরে যাবেন। এ সুযোগে প্রিয় রাজনৈতিক দলকে সমর্থন জানাতে সঙ্গে করে আরও দুজনকে নিয়ে ঢাকায় এসেছেন তিনি। ঢাকায় প্রবেশে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা হয়েছে কি না জানতে চাইলে আব্দুল জলিল বলেন, ‘নিজের সিস্টেমে আসছি।’
ঢাকায় প্রবেশে বাধা এড়াতে অনেকে কয়েকদিন আগেই এসেছেন। যার সম্ভব হয়েছে আত্মীয় বাড়িতে এসে উঠেছেন। কেউ আবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
ময়মনসিংহ থেকে আত্মীয় বাড়িতে বেড়াতে আসার নাম করে তিন ধরে ঢাকায় অবস্থান করা বিএনপিকর্মী নুর আলম বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে জানিয়ে রাখছিলাম ঢাকায় আসবো। গত তিন ধরে আছি। প্রত্যেকদিনই আসি কার্যালয়ের সামনে। ভালো লাগে। এখন মানুষজন বাড়ছে আরও ভালো লাগছে। মনে সাহস আসতেছে। ইনশাল্লাহ, এবার এ সরকারের পতন হবেই।
বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকায় প্রবেশ করা বেশ কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা হাসপাতালে ভর্তির নাম করে ঢাকায় এসেছেন। তারা বলেন, ‘চিকিৎসার পাশাপাশি সমাবেশও যুক্ত হতেই তাদের আসা।’
রাজধানীর একটি হাসপাতালে রোগী নিয়ে এসেছিলেন জানিয়ে বগুড়া জয়পুরহাট থেকে আসা আওয়াল বলেন, ‘আমি ভর্তি ছিলাম না। তবে সঙ্গে রাত রোগী ছিল। তার সঙ্গেই আসছি। চিকিৎসকের পরামর্শ তাকে ভর্তি করা হয়েছে।’ এদিকে বিএনপির কার্যালয়ে নেতাকর্মীর সংখ্যা বাড়ায় পুলিশ সদস্যদের সংখ্যাও বেড়েছে।