ঢাকা , শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গতি ফিরবে ৩ দিন পর, শনিবার রাতে বন্ধ ইন্টারনেট চালু হবে

  • পোষ্ট হয়েছে : ১০:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৩
  • / ৫০ বার দেখা হয়েছে

প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: রাজধানীর মহাখালীতে খাজা টাওয়ারে আগুনের ঘটনায় সারাদেশে ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হচ্ছে। প্রায় ৬০০ ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের সেবা বন্ধ হয়ে পড়ে। দ্রুত এসব সেবা পুনরায় চালুর চেষ্টা করছে প্রতিষ্ঠানগুলো। আগুনে পোড়া ভবন থেকে প্রয়োজনীয় ডিভাইস বের করে অন্য কোথাও অস্থায়ী ডাটা সেন্টার বসানোর চেষ্টা করছেন তারা।

 

ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) নেতারা বলছেন, ডাটা সেন্টারে অগ্নিকাণ্ডে যেসব প্রতিষ্ঠানের ইন্টারনেট সার্ভিস বন্ধ হয়ে গেছে, সেগুলো পুরোপুরি চালু করতে আরও ২৪ ঘণ্টা সময় লাগবে। অর্থাৎ শনিবার (২৮ অক্টোবর) রাত নাগাদ বন্ধ ইন্টারনেট সেবা ফিরবে।

 

সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ঢাকা কোলোর কর্মী নাজমুল হক প্রথমবার্তাকে বলেন, ‘ভবনে ঢুকে সবার আগে আমরা ডিভাইস বের করে এনেছি। জিজিসি নোট, এপেন এ, জুনিফার রাউটারসহ ইন্টারনেট সেবা দিতে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির মধ্যে যেগুলো অক্ষত রয়েছে, সেগুলো বের করে পাশে আরেকটি ভবনে আমরা সেট করেছি।’

 

তিনি বলেন, ‘গতি কম-বেশি নিয়ে এখন আমরা কাজ করছি না। আমরা এখন চেষ্টা করছি দ্রুত বন্ধ হওয়া ইন্টারনেট সার্ভিস চালু করার। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেটা সম্ভব হতে পারে।’

 

কেএইচ নেটওয়ার্কের এইচআর অ্যান্ড অ্যাডমিন কর্মকর্তা শেখ জনি বলেন, ‘ভবনে তো কাজ করার কোনো অনুমতি দিচ্ছে না। বাধ্য হয়ে টেলিকম ডিভাইসসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বের করে নিয়েছি আমরা। এখন বাইরে কোথাও এটা সচল করে সার্ভিস চালুর চেষ্টা করবো।’

 

জানতে চাইলে আইএসপিএবির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল করিম ভূইয়া প্রথমবার্তাকে বলেন, ‘আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু ভবনের মালিকপক্ষ সেখানে আমাদের কাজ করতে দিচ্ছে না।

 

তারা আমাদের ডিভাইসগুলো বের করার সুযোগ দিয়েছেন। সেগুলো আমাদের আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলো বের করে এনেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ডাটা সেন্টার ভালো ছিল।

 

পুড়েছে ফাইবার ক্যাবল। ফলে সেন্টারের ভেতরের প্রয়োজনীয় ডিভাইস যেকোনো জায়গায় বসিয়ে আমরা ইন্টারনেট সচল রাখার কাজ করতে পারছি।

 

এখন যে অবস্থায় আমরা আছি, তা থেকে বলতে পারি—২৪ ঘণ্টা সময় লাগবে আমাদের। এ সময়ের মধ্যে বন্ধ হওয়া সব ইন্টারনেট সার্ভিস পুনরায় চালু করতে পারবো আমরা।

 

তবে ধীরগতি থাকতে পারে। আর স্বাভাবিক গতির ইন্টারনেট পেতে আরও তিন-চারদিন অপেক্ষা করতে হবে।’অন্যদিকে মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলো বিকল্প উপায়ে নেটওয়ার্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে।

 

গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংক সূত্র বলছে, এরই মধ্যে এক অপারেটরের নম্বর থেকে অন্য অপারেটরে কল করতে যে নেটওয়ার্ক বিভ্রাট হচ্ছিল, তা এখন একেবারে কমে এসেছে।

 

২৪ ঘণ্টার মধ্যে শতভাগ আগের অবস্থায় ফিরবে মোবাইল নেটওয়ার্ক। অর্থাৎ সেক্ষেত্রেও স্বাভাবিক নেটওয়ার্ক পেতে শনিবার (২৮ অক্টোবর) রাত পর্যন্ত গ্রাহকদের অপেক্ষা করতে হবে।

 

বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) বিকেল ৪টা ৫৯ মিনিটে খাজা টাওয়ারে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।

 

১২ ঘণ্টার চেষ্টায় মধ্যরাতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। অগ্নিকাণ্ডে ভবনে থাকা তিনজন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুজন নারী। তারা একটি ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের কর্মী।

 

নিহত অপরজন সাইফ পাওয়ার টেকের প্রকৌশলী। এদিকে, খাজা টাওয়ার রাজধানীর সবচেয়ে বড় ডাটা হাব হওয়ায় আগুন লাগার পর থেকে ডিভাইসগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়।

 

এতে ঢাকাসহ সারাদেশে ইন্টারনেটে ধীরগতি দেখা দেয়। বৃহস্পতিবার রাতে অনেক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের ইন্টারনেট সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায়। তখন জানানো হয়, প্রায় ৬০০ আইএসপি প্রতিষ্ঠানের সেবা বন্ধ হয়ে পড়েছে। এতে সারাদেশের গ্রাহকরা সমস্যা পড়তে পারেন।

ট্যাগ :

শেয়ার দিয়ে সাথেই থাকুন

গতি ফিরবে ৩ দিন পর, শনিবার রাতে বন্ধ ইন্টারনেট চালু হবে

পোষ্ট হয়েছে : ১০:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৩

প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: রাজধানীর মহাখালীতে খাজা টাওয়ারে আগুনের ঘটনায় সারাদেশে ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হচ্ছে। প্রায় ৬০০ ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের সেবা বন্ধ হয়ে পড়ে। দ্রুত এসব সেবা পুনরায় চালুর চেষ্টা করছে প্রতিষ্ঠানগুলো। আগুনে পোড়া ভবন থেকে প্রয়োজনীয় ডিভাইস বের করে অন্য কোথাও অস্থায়ী ডাটা সেন্টার বসানোর চেষ্টা করছেন তারা।

 

ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) নেতারা বলছেন, ডাটা সেন্টারে অগ্নিকাণ্ডে যেসব প্রতিষ্ঠানের ইন্টারনেট সার্ভিস বন্ধ হয়ে গেছে, সেগুলো পুরোপুরি চালু করতে আরও ২৪ ঘণ্টা সময় লাগবে। অর্থাৎ শনিবার (২৮ অক্টোবর) রাত নাগাদ বন্ধ ইন্টারনেট সেবা ফিরবে।

 

সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ঢাকা কোলোর কর্মী নাজমুল হক প্রথমবার্তাকে বলেন, ‘ভবনে ঢুকে সবার আগে আমরা ডিভাইস বের করে এনেছি। জিজিসি নোট, এপেন এ, জুনিফার রাউটারসহ ইন্টারনেট সেবা দিতে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির মধ্যে যেগুলো অক্ষত রয়েছে, সেগুলো বের করে পাশে আরেকটি ভবনে আমরা সেট করেছি।’

 

তিনি বলেন, ‘গতি কম-বেশি নিয়ে এখন আমরা কাজ করছি না। আমরা এখন চেষ্টা করছি দ্রুত বন্ধ হওয়া ইন্টারনেট সার্ভিস চালু করার। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেটা সম্ভব হতে পারে।’

 

কেএইচ নেটওয়ার্কের এইচআর অ্যান্ড অ্যাডমিন কর্মকর্তা শেখ জনি বলেন, ‘ভবনে তো কাজ করার কোনো অনুমতি দিচ্ছে না। বাধ্য হয়ে টেলিকম ডিভাইসসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বের করে নিয়েছি আমরা। এখন বাইরে কোথাও এটা সচল করে সার্ভিস চালুর চেষ্টা করবো।’

 

জানতে চাইলে আইএসপিএবির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল করিম ভূইয়া প্রথমবার্তাকে বলেন, ‘আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু ভবনের মালিকপক্ষ সেখানে আমাদের কাজ করতে দিচ্ছে না।

 

তারা আমাদের ডিভাইসগুলো বের করার সুযোগ দিয়েছেন। সেগুলো আমাদের আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলো বের করে এনেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ডাটা সেন্টার ভালো ছিল।

 

পুড়েছে ফাইবার ক্যাবল। ফলে সেন্টারের ভেতরের প্রয়োজনীয় ডিভাইস যেকোনো জায়গায় বসিয়ে আমরা ইন্টারনেট সচল রাখার কাজ করতে পারছি।

 

এখন যে অবস্থায় আমরা আছি, তা থেকে বলতে পারি—২৪ ঘণ্টা সময় লাগবে আমাদের। এ সময়ের মধ্যে বন্ধ হওয়া সব ইন্টারনেট সার্ভিস পুনরায় চালু করতে পারবো আমরা।

 

তবে ধীরগতি থাকতে পারে। আর স্বাভাবিক গতির ইন্টারনেট পেতে আরও তিন-চারদিন অপেক্ষা করতে হবে।’অন্যদিকে মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলো বিকল্প উপায়ে নেটওয়ার্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে।

 

গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংক সূত্র বলছে, এরই মধ্যে এক অপারেটরের নম্বর থেকে অন্য অপারেটরে কল করতে যে নেটওয়ার্ক বিভ্রাট হচ্ছিল, তা এখন একেবারে কমে এসেছে।

 

২৪ ঘণ্টার মধ্যে শতভাগ আগের অবস্থায় ফিরবে মোবাইল নেটওয়ার্ক। অর্থাৎ সেক্ষেত্রেও স্বাভাবিক নেটওয়ার্ক পেতে শনিবার (২৮ অক্টোবর) রাত পর্যন্ত গ্রাহকদের অপেক্ষা করতে হবে।

 

বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) বিকেল ৪টা ৫৯ মিনিটে খাজা টাওয়ারে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।

 

১২ ঘণ্টার চেষ্টায় মধ্যরাতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। অগ্নিকাণ্ডে ভবনে থাকা তিনজন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুজন নারী। তারা একটি ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের কর্মী।

 

নিহত অপরজন সাইফ পাওয়ার টেকের প্রকৌশলী। এদিকে, খাজা টাওয়ার রাজধানীর সবচেয়ে বড় ডাটা হাব হওয়ায় আগুন লাগার পর থেকে ডিভাইসগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়।

 

এতে ঢাকাসহ সারাদেশে ইন্টারনেটে ধীরগতি দেখা দেয়। বৃহস্পতিবার রাতে অনেক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের ইন্টারনেট সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায়। তখন জানানো হয়, প্রায় ৬০০ আইএসপি প্রতিষ্ঠানের সেবা বন্ধ হয়ে পড়েছে। এতে সারাদেশের গ্রাহকরা সমস্যা পড়তে পারেন।