ঘোড়ায় চড়ে খাবার ডেলিভারি দিচ্ছেন এজেন্ট কারন পাম্পে তেল নেই
- পোষ্ট হয়েছে : ০২:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৪
- / ৪৫ বার দেখা হয়েছে
ট্রাকচালকদের আন্দোলনের কারণে পেট্রোল পাম্পগুলোতে তেলের সংকট। পাম্পের সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও তেল পাচ্ছেন না অনেকে। এ অবস্থায় মোটরসাইকেল বাদ দিয়ে ঘোড়া নিয়েই বেরিয়ে পড়লেন একজন ফুড ডেলিভারি এজেন্ট। গত মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) এমন দৃশ্য দেখা গেছে ভারতের হায়দরাবাদে। সেই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
ভিডিওতে দেখা যায়, ফুড ডেলিভারি সংস্থা জোম্যাটোর লোগোযুক্ত লাল জ্যাকেট পরা এক যুবক ঘোড়ার পিঠে চড়ে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছেন। তার পিঠে রয়েছে খাবার বহনের হটব্যাগ। উৎসুক পথচারীদের দিকে হাত নাড়তেও দেখা যায় সেই যুবককে।
ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন এনডিটিভির সাংবাদিক উমা সুধীর। ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, হায়দরাবাদে জ্বালানি তেলের ঘাটতি দেখা দেওয়ায় ঘোড়ার পিঠে চেপে ফুড ডেলিভারি দেওয়া হচ্ছে। দৃশ্যটি ইম্পেরিয়াল হোটেলের বিপরীতে চঞ্চলগুড়ায়। হিট অ্যান্ড রান নিয়ে নতুন আইনের বিরোধিতায় ট্রাকচালকদের আন্দোলন চলছে। এর জেরে পেট্রোল পাম্পে লম্বা লাইন লাগছে। তারই ফল এই দৃশ্য।
ভিডিওতে ঘোড়ার পিঠে চেপে থাকা যুবককে রাস্তার পাশের একজনের সঙ্গে কথা বলতে শোনা যায়। সেখানে তাকে বলতে শোনা যায়, পেট্রোল পাম্পে তেল শেষ হয়ে গিয়েছিল। সে কারণেই তিনি ঘোড়ায় চেপে কাজে বেরিয়েছেন।
ভিডিওতে দেখা যায়, জোম্যাটোর ডেলিভারি এজেন্টকে একজন জিজ্ঞেস করছেন তিনি কেন ঘোড়া নিয়ে বেরিয়েছেন। জবাবে তিনি বলছেন, পেট্রোল পাইনি ভাই। তিন ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম। অর্ডার পাওয়ার পর বেরিয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু পেট্রোল না পেয়ে এই দশা।
উল্লেখ্য, গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হলে চালকের সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড হবে- ভারতে নতুন এই আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে দেশটির পরিবহন সংগঠনগুলো। সাজা কমানোর দাবিতে ধর্মঘট ডেকেছিল তাদের একাধিক সংগঠন। দিনভর জায়গায় জায়গায় আন্দোলন বিক্ষোভের পর অবশেষে রাতে কাজে ফিরেছেন চালকরা।
তবে এর আগে তাদের আন্দোলনের জেরে জ্বালানি সরবরাহের ওপর চাপ পড়তে শুরু করেছিল গোটা ভারতে। বহু জায়গায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল পেট্রোল পাম্প। আতঙ্কের জেরে বিভিন্ন পেট্রোল পাম্পের সামনে লম্বা লাইন লাগতে দেখা যায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয় অনেককেই। তবে বুধবার থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে অল ইন্ডিয়া মোটর ট্রান্সপোর্ট কংগ্রেস। বৈঠকের পরপরই সংগঠনটির পক্ষ থেকে বুধবার ট্রাকচালকদের কাজে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
সরকারি সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে পরিবহন সংগঠনকে জানানো হয়েছে, ভারতীয় ন্যায় সংহিতার বিতর্কিত আইনটি এখনই কার্যকর হচ্ছে না। বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লা জানান, আইনের ১০৬(২) ধারা নিয়ে কোনো ধরনের সংশয় থাকলে কেন্দ্রীয় সরকার তা পর্যালোচনা করে দেখবে।
নতুন এই আইনে, হিট অ্যান্ড রান মামলাগুলোতে সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং সাত লাখ রুপি জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। পুরোনো আইনে এই সাজা ছিল মাত্র দুই বছরের জেল এবং তুলনামূলক অনেক কম জরিমানা।
নতুন আইন অনুসারে, বেপরোয়া গাড়িচালনার কারণে কারও মৃত্যু হলে এবং ঘটনাটি পুলিশের কাছে না জানিয়ে পালিয়ে গেলে চালকের সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।