1. [email protected] : bijoy : bijoy Book
  2. [email protected] : News Room : News Room
  3. [email protected] : news uploader : news uploader
  4. [email protected] : prothombarta :
সত্যিই কি যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে যুক্তরাষ্ট্র-ইরান?
সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৬:১৬ রাত

সত্যিই কি যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে যুক্তরাষ্ট্র-ইরান?

  • পোষ্ট হয়েছে : সোমবার, ২২ জানুয়ারী, ২০২৪

গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলের জয়ে সাহায্য করছে যুক্তরাষ্ট্র। ঠিক একইভাবে সংঘাত যাতে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ছড়িয়ে না পড়ে তারও চেষ্টা করছে দেশটি। তবে পরিস্থিতি এরই মধ্যে বেশ অবনতি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও ইরান বিভিন্নভাবে একে অপরের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করছে। বিশেষ করে ইরান তাদের সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

যুদ্ধ শুরুর পর ইরাক ও সিরিয়ায় মার্কিন ঘাঁটি লক্ষ্য করে ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো ১৪০টির বেশি ড্রোন হামলা করেছে। সবচেয়ে বড় হামলাটি করা হয় ২০ জানুয়ারি। এদিন ইরাকে মার্কিন ঘাঁটি আল আসাদে বেশ কিছু ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে হামলা করা হয়। বলা হয়েছে, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে অধিকাংশ রকেট ধ্বংস করা হয়। তারপরও কয়েকটি রকেট ঘাঁটিতে আঘাত হানে। এতে বেশ কিছু মার্কিন ও ইরাকি সেনা আহত হয়েছেন। ফলে ইরানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ওপর চাপ বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে উভয় সংকট তৈরি হয়েছে। যদি কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তাহলে মনে হবে যুক্তরাষ্ট্র দুর্বল। আর যদি পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়া হয় তাহলে নির্বাচনকে সামনে রেখে যুদ্ধের ঝুঁকিতে পড়বে বাইডেন প্রশাসন।

এদিকে ইয়েমেনে ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের লক্ষ্যবস্তুতে ৭তম বারের মতো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ গত কয়েক মাস ধরে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে হুথি। বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির দাবি ফিলিস্তিনে যুদ্ধবিরতি কার্যকর না করা পর্যন্ত জাহাজে হামলা করা হবে। এতে লোহিত সাগরে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে তা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্ররা। তবে এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি।

এরই মধ্যে বাইডেন নিজেও স্বীকার করেছেন হামলা করেও হুথিদের থামানো যাবে না। ওয়াশিংটন পোস্ট এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইয়েমেনে সামরিক অভিযানের কথা ভাবছে বাইডেন প্রশাসন।

ইসরায়েল লেবানন সীমান্তেও প্রায় প্রতিদিন হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটছে। ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলা চালাচ্ছে। অন্যদিকে এর জবাবে ইসরায়েলও হামলা চালাচ্ছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র যে কোনো অগ্রিম হামলার ব্যাপারে ইসরায়েলকে নিরুৎসাহিত করছে। তবে ইসরায়েল তাদের প্রতিশোধের পাশাপাশি বড় অভিযানের হুমকি দিচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মুখোমুখি অবস্থানের কারণে সংকট গভীর হচ্ছে। ইরান তাদের সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর মধ্যমে ইসরায়েলকে যেমন দুর্বল করতে চায় তেমনি যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে দিতে চায়। তাছাড়া আরব রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে ইসরায়েলের যে সম্পর্ক তৈরি হচ্ছে সেটাকে থামিয়ে দিতে চায়। অন্যদিকে বিরতি নিয়ে প্রতিশোধমূলক হামলা পরিচালনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান এখন পর্যন্ত সরাসরি সংঘাতে জড়ায়নি। তবে শেষ পর্যন্ত ভারসাম্য রক্ষা সম্ভব নাও হতে পারে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি দেশটির সামরিক বাহিনীকে কৌশলগত ধৈর্যের আহ্বান জানিয়েছেন। তবে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের আলি ওয়ায়েজ মনে করেন, ইরানের সরকার এখন মনে করে যে তাদের প্রতিরোধ পুনরুদ্ধার করা দরকার।

ইরান প্রমাণ করতে চায় তাদের যে কোনো ধরনের সক্ষমতা রয়েছে। তবে গুঞ্জন রয়েছে যে ইসরায়েল যুদ্ধের পরিধি বাড়াতে ফাঁদ পেতেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রকেও যুদ্ধে জড়াতে চায়।

বাইডেন প্রশাসন বারবারই বলে আসছে তারা যুদ্ধের বিস্তার চাননা। এর আগে ২০২০ সালে ইরানিয়ান জেনারেল কাসেম সোলায়মানিকে কেন্দ্র করেও দেশ দুইটির মধ্যে যুদ্ধ যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।

বর্তমানে বাইডেন অনেক বেশি সতর্ক। তিনি কোনোভাবেই চাচ্ছেন না যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়ুক। কারণ দেশটি ইউক্রেন যুদ্ধে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাইওয়ান প্রণালীতেও চীনের বিরুদ্ধে সক্রিয় অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তাই অন্যকোনো ঝামেলায় জড়াতে চায় না দেশটি।

সম্প্রতি ইরাক ও সিরিয়ায় যে সংখ্যক হামলার শিকার মার্কিন সেনারা হচ্ছেন সেভাবে জবাব দিচ্ছে না। একইভাবে ইয়েমেনেও হুথিদের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করার চেষ্টা করছে।

ওয়াশিংটন ডিসির একটি থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস-এর অ্যারন ডেভিড মিলার বলেছেন, মার্কিন প্রশাসন জানে সমস্যাটির আপাতত কোনো সমাধান নেই। এটিকে শুধু ম্যানেজ করা যেতে পারে।

বাইডেন মনে করছেন ইসরায়েল শিগগির গাজা যুদ্ধে জয়ী হবে, না হয় যুদ্ধ বন্ধ হবে এবং এভাবে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তাপ থামবে। তবে ইসরায়েল এখনো একদিকে যেমন হামাসকে দমন করতে পারছে না তেমনি জিম্মি বন্দিদেরও উদ্ধার করতে পারেনি। ফলে শিগগির যুদ্ধ বন্ধের ইঙ্গিত মিলছে না। এরই মধ্যে গাজায় নিহতের সংখ্যা ২৫ হাজার ছাড়িয়েছে। কেউ কেউ গণহত্যার জন্য ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করছে। বাইডেনের ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগকেও পাত্তা দিচ্ছেন না নেতানিয়াহু।

মিলার বলেছেন, মার্কিন ঘাঁটিতে বড় ধরনের হামলা হতে পারে। যদি এভাবে হামলা হতে থাকে অথবা মার্কিন উল্লেখযোগ্য সেনা কোনো হামলায় হতাহত হয় তাহলে ইরানের সামরিক বাহিনীর ওপর হামলার বিকল্প থাকবে না যুক্তরাষ্ট্রের হাতে।

 

Facebook Comments Box

শেয়ার দিয়ে সাথেই থাকুন

print sharing button
এ বিভাগের অন্যান্য খবর