ঢাকা , শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ২ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সীমান্তে অনেক রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের অপেক্ষায়

  • পোষ্ট হয়েছে : ০২:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ১৮ বার দেখা হয়েছে

প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: সতে দিতে চায় না। বরং এখনই সময় সেখানে আমাদের চলে যাওয়া। যেটা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসময়ে যেতে পারলে খুবই ভালো হয়। সেই সুরে সুর মিলিয়ে আরেক রোহিঙ্গা বলেন, তারা কষ্ট পেলেও, জুলুমের শিকার হলেও মিয়ানমারেই থাকা দরকার তাদের। ওরা থাকতে পারলে পরে আমরাও যেতে পারবো।

 

মিয়ানমারে দ্রুত ফিরে যাওয়ার জন্য এদিন সকালে উখিয়ার লম্বাশিয়া ক্যাম্পে সম্মেলন করেন এফডিএমএন রিপ্রেজেন্টেটিভ কমিটি। এতে নির্বাচিত বিভিন্ন ক্যাম্পের ৪ হাজার প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। আরাকান আর্মিকে ইঙ্গিত করে কমিটির নেতা মাস্টার ছৈয়দ উল্লাহ বলেন, সংগঠনটি রোহিঙ্গাদের অবস্থান স্পষ্ট করলে তারা এখনই চলে যেতে প্রস্তুত।

 

এর আগে গত সপ্তাহে স্থানীয়রা জানায়, মিয়ানমারের মংডু ও বলিবাজার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশের সীমানার কাছাকাছি অবস্থান করছে রোহিঙ্গারা। আবার কিছু রোহিঙ্গা ডিঙি নৌকা করে নাফ নদীতে অবস্থান করছে। মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) রোহিঙ্গাদের কোনো বাধা দিচ্ছে না। এতে বাংলাদেশ সীমান্তে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

 

নাইক্ষংছড়ির তুমব্রুর কোণারপাড়া এলাকার বাসিন্দারা জানান, গত রোববার দুপুর ১টার পর তুমব্রুর কোণারপাড়া, ভাজাবনিয়া এবং তুমব্রু বাজার থেকে ওপারে হেলিকপ্টার মহড়া দিতে দেখা গেছে। অন্তত ২৫ মিনিটেরও বেশি সময় হেলিকপ্টার চক্কর দেয়। এ সময় গোলাগুলির শব্দও শোনা গেছে। তার আগে শনিবার দুটি মর্টারশেল এ পারে এসে পড়ে। এতে পুরো এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

 

বিজিবির টেকনাফ ব্যাটালিয়নের কমান্ডার লে. কর্নেল মহিউদ্দীন বলেন, রোহিঙ্গাদের সম্ভাব্য অনুপ্রবেশ নিয়ে সতর্ক অবস্থানে আছে বিজিবি। সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। একজন রোহিঙ্গাকেও প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। আমরা সবসময় সজাগ আছি।

 

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান বলেন, সীমান্তের কাছাকাছি মিয়ানমারের ওপারে গোলাগুলি হচ্ছে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এটি মিয়ানমারের অভ্যন্তরের ঘটনা। রোহিঙ্গাদের সম্ভাব্য অনুপ্রবেশ নিয়ে বিজিবি ও কোস্টগার্ডকে সতর্ক করা হয়েছে।

 

এদিকে গত কয়েকদিনের ব্যাপক সংঘর্ষে প্রেক্ষাপটে নিরাপত্তা বিবেচনায় সীমান্তবর্তী এলাকার পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মাদ্রাসা ও একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ।

 

শরণার্থী কমিশন বলছে, নতুন করে যেকোনো অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে সরকার। শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসান কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, আরও রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢোকার আশঙ্কা রয়েছে। তবে আমাদের বর্ডার গার্ড (বিজিবি) অত্যন্ত সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

ট্যাগ :

শেয়ার দিয়ে সাথেই থাকুন

সীমান্তে অনেক রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের অপেক্ষায়

পোষ্ট হয়েছে : ০২:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: সতে দিতে চায় না। বরং এখনই সময় সেখানে আমাদের চলে যাওয়া। যেটা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসময়ে যেতে পারলে খুবই ভালো হয়। সেই সুরে সুর মিলিয়ে আরেক রোহিঙ্গা বলেন, তারা কষ্ট পেলেও, জুলুমের শিকার হলেও মিয়ানমারেই থাকা দরকার তাদের। ওরা থাকতে পারলে পরে আমরাও যেতে পারবো।

 

মিয়ানমারে দ্রুত ফিরে যাওয়ার জন্য এদিন সকালে উখিয়ার লম্বাশিয়া ক্যাম্পে সম্মেলন করেন এফডিএমএন রিপ্রেজেন্টেটিভ কমিটি। এতে নির্বাচিত বিভিন্ন ক্যাম্পের ৪ হাজার প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। আরাকান আর্মিকে ইঙ্গিত করে কমিটির নেতা মাস্টার ছৈয়দ উল্লাহ বলেন, সংগঠনটি রোহিঙ্গাদের অবস্থান স্পষ্ট করলে তারা এখনই চলে যেতে প্রস্তুত।

 

এর আগে গত সপ্তাহে স্থানীয়রা জানায়, মিয়ানমারের মংডু ও বলিবাজার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশের সীমানার কাছাকাছি অবস্থান করছে রোহিঙ্গারা। আবার কিছু রোহিঙ্গা ডিঙি নৌকা করে নাফ নদীতে অবস্থান করছে। মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) রোহিঙ্গাদের কোনো বাধা দিচ্ছে না। এতে বাংলাদেশ সীমান্তে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

 

নাইক্ষংছড়ির তুমব্রুর কোণারপাড়া এলাকার বাসিন্দারা জানান, গত রোববার দুপুর ১টার পর তুমব্রুর কোণারপাড়া, ভাজাবনিয়া এবং তুমব্রু বাজার থেকে ওপারে হেলিকপ্টার মহড়া দিতে দেখা গেছে। অন্তত ২৫ মিনিটেরও বেশি সময় হেলিকপ্টার চক্কর দেয়। এ সময় গোলাগুলির শব্দও শোনা গেছে। তার আগে শনিবার দুটি মর্টারশেল এ পারে এসে পড়ে। এতে পুরো এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

 

বিজিবির টেকনাফ ব্যাটালিয়নের কমান্ডার লে. কর্নেল মহিউদ্দীন বলেন, রোহিঙ্গাদের সম্ভাব্য অনুপ্রবেশ নিয়ে সতর্ক অবস্থানে আছে বিজিবি। সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। একজন রোহিঙ্গাকেও প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। আমরা সবসময় সজাগ আছি।

 

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান বলেন, সীমান্তের কাছাকাছি মিয়ানমারের ওপারে গোলাগুলি হচ্ছে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এটি মিয়ানমারের অভ্যন্তরের ঘটনা। রোহিঙ্গাদের সম্ভাব্য অনুপ্রবেশ নিয়ে বিজিবি ও কোস্টগার্ডকে সতর্ক করা হয়েছে।

 

এদিকে গত কয়েকদিনের ব্যাপক সংঘর্ষে প্রেক্ষাপটে নিরাপত্তা বিবেচনায় সীমান্তবর্তী এলাকার পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মাদ্রাসা ও একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ।

 

শরণার্থী কমিশন বলছে, নতুন করে যেকোনো অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে সরকার। শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসান কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, আরও রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢোকার আশঙ্কা রয়েছে। তবে আমাদের বর্ডার গার্ড (বিজিবি) অত্যন্ত সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।