ট্রলার মহজনকে কুপিয়ে নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছে ডাকাত দলের সদস্যরা
- পোষ্ট হয়েছে : ০১:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
- / ২২ বার দেখা হয়েছে
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় ‘এফবি মা-বাবার দোয়া’ নামের একটি ট্রলার মহজনকে কুপিয়ে নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছে ডাকাত দলের সদস্যরা। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১ টায় গলাচিপা উপজেলাধীন পক্ষীয়া নদীতে এ ঘটনা ঘটে।
ওই ট্রলার মহজনের নাম রাশেদ খান (৩০)। তিনি উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরমোন্তাজ গ্রামের আলতাফ খানের ছেলে।
পরিবারের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ তুলে বলা হয়েছে, এটি পরিকল্পিত ডাকাতি। কারণ ট্রলারে কর্মচারী মো. ইব্রাহিম ডাকাত দলের সদস্য ছিলেন।
এ ঘটনার পরে বরগুনার পাথরঘাটা বিএফডিসি মৎস্য ঘাটে মাছ বিক্রি করতে আসলে ঘাতক ইব্রাহিমকে আটক করে পাথরঘাটা থানা পুলিশ। এ দিকে রাশেদের পরিবারে চলছে আহাজারি। গতকাল রাত থেকে নদীতে রাশেদের মরদেহ খুঁজছে স্বজনরা।
জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় আনুমানিক ২০ লাখ টাকার মাছ নিয়ে গলাচিপার হরিদেবপুর ঘাটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে এফবি ‘মা-বাবার দোয়া’ নামের ট্রলারটি। এ সময় ট্রলারে মহজনসহ তিনজন কর্মচারী ছিলেন। তারা হলেন- ট্রলার মাঝি চরমোন্তাজ গ্রামের জামাল মোল্লা, ট্রলার মহজন রাশেদ খান ও ট্রলারের কর্মচারী বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার আঙ্কুজানপাড়া এলাকার সুলতান হোসেনের ছেলে মো. ইব্রাহিম।
সূত্র বলছে, ইঞ্জিনচালিত ওই ট্রলারে টাইগার চিংড়ি মাছ নিয়ে খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা হন। সেখান থেকে গলাচিপা উপজেলার পক্ষীয়া নদীতে পৌঁছালে মাছের পরিমাণ বেশি থাকায় ইব্রাহিম মাছগুলো আত্মসাৎ করার জন্য ট্রলার মালিক রাশেদ খানকে হত্যা করে নদীতে ফেলে দেন। পরে মাঝি জামাল হোসেনকেও হত্যা করার উদ্দেশ্যে আঘাত করলে তিনি নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মরক্ষা করেন। ট্রলার মাঝি জামাল হোসেন কলাপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে খুলনা মাছের আড়তে জানালে সেখান থেকে পাথরঘাটা পাইকার সমিতিকে আবহিত করা হয়। তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন রাতে বাচ্চু নামের এক পাইকার মাছগুলো ক্রয় করছে। পরে সেখানে পাইকার সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম এসে ঘাতক ইব্রাহিমকে আটক করে থানায় সোপর্দ করেন।
রাশেদ খানকে হত্যার ব্যাপারে ইব্রাহিম সকালে বিএফডিসি পাইকার সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলামের কাছে স্বীকার করেন।
রাশেদ খানের ভাই তুহিন বলেন, মাছ নিয়ে পক্ষীয়া নদীতে রাত ১১ টার দিকে ডাকাতের কবলে পড়ে ট্রলার। ট্রলারে লোক ছিল তিনজন। এরমধ্যে ইব্রাহিম নামে একজন ডাকাত তাদের সঙ্গে ছিল। এবং তিনি ডাকাত দলের সদস্য। ডাকাতরা ট্রলারের মাঝি জামাল মোল্লাকে মারধর ও আমার ভাই রাশেদ খানকে কুপিয়ে নদীতে ফেলে দেয়। এটি পরিকল্পিত ডাকাতি। ইব্রাহিম ডাকাত দলের সদস্য। গত ১৫ দিন আগে ভুয়া পরিচয় দিয়ে ট্রলারে কাজের জন্য আসেন ইব্রাহিম। এখন ইব্রাহিম পুলিশের আওতায় আছে। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
পাথরঘাটা মৎস্য আড়ত সমিতির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর জোমাদ্দার বলেন, মাছ উঠাতে একটা বরফ মিলে গিয়েছিল। ঘটনা শুনলাম, একজনকে হত্যা করে নদীতে ফেলে দিয়ে ট্রলার ডাকাতি করে নিয়ে আসছে। ট্রলারে রক্ত দেখা গেছে। ইব্রাহিম স্বীকার করেছে তিনজন লোক ছিল। একজন কুপিয়ে নদীতে ফেলে দিছে আর একজন লাফিয়ে নদীতে পড়ে গেছে।
পাথরঘাটা থানা পুলিশ জানায়, আটক ইব্রাহিমকে জিজ্ঞাসা করলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়, তাদের নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে এ ঘটনা ঘটে। আমরা ট্রলার জব্দ করেছি। মাছ নিলামে বিক্রি করে ট্রলারের মালিক নিহত রাশেদের ভাই তুহিনের কাছে টাকা পৌঁছে দেওয়া হবে।
রাঙ্গাবালী থানার ওসি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ট্রলার মহজনকে কুপিয়ে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। একজন আহত হয়েছে। ট্রলার ও ইব্রাহিমকে আটক করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত