1. [email protected] : bijoy : bijoy Book
  2. [email protected] : News Room : News Room
  3. [email protected] : news uploader : news uploader
  4. [email protected] : prothombarta :
রিজার্ভ এখন ৩৪.২১ বিলিয়ন ডলার
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৪০ রাত

রিজার্ভ এখন ৩৪.২১ বিলিয়ন ডলার

  • পোষ্ট হয়েছে : সোমবার, ২১ নভেম্বর, ২০২২

প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: দেশের মধ্যে ডলার সংকট চরমে। এ সংকটের মধ্যেই অর্থনীতির অন্যতম সূচক রেমিট্যান্স গতি নেতিবাচক ধারায়। যদিও চলতি অর্থবছরের শুরুর মাস জুলাই ও এর পরের মাস আগস্টে দুই বিলিয়ন ডলার করে রেমিট্যান্স এসেছিল। এরপর টানা দুই মাস দেড় বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে আসে রেমিট্যান্স। চলতি নভেম্বরে দুই বিলিয়ন ডলারের ঘরে পৌঁছাতে পারবে না। এখন পর্যন্ত ভালো অবস্থায় আসেনি রেমিট্যান্সের ধারা। যদিও বৈধপথে রেমিট্যান্স বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকার।

এদিকে চলমান ডলার সংকট মোকাবিলায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে প্রতিনিয়ত ডলার সরবরাহ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি নভেম্বরের শুরুতে ৩৫ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ থাকলেও এখন তা কমে ৩৪ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। এ রিজার্ভ দিয়ে চার মাসের (প্রতি মাসে ৮ বিলিয়ন হিসাবে) আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।

তবে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি অনুসরণ করে দেশের রিজার্ভ থেকে আরও ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার বাদ যাবে। সেক্ষেত্রে দেশের রিজার্ভ হবে ২৫ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে রেমিট্যান্স আসার গতিও স্লোথ হয়েছে। চলতি মাস নভেম্বরের প্রথম ১৮ দিনে প্রায় ১০৬ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে দেশে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গত ১ নভেম্বর দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ মজুত ছিল ৩৫ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার। গত ৭ নভেম্বর আরও কিছুটা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৫ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলারে। এরপর নভেম্বরের ৭ তারিখ রিজার্ভ থেকে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ১৩৫ কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়। পাশাপাশি আমদানি দায় মেটাতে ১৩ কোটি ১০ লাখ ডলার বিক্রি করা হয় রিজার্ভ থেকে। ফলে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে প্রায় ৩৪ দশমিক ২৮ বিলিয়নের নেমে আসে।

গত ৯ নভেম্বর রিজার্ভ ছিল ৩৪ দশমিক ২৫ বিলিয়ন, ১৪ নভেম্বর বেড়ে দাঁড়ায় ৩৪ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলারে, ১৫ নভেম্বর রিজার্ভ থেকে ১১৫ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করায় তা নেমে আসে ৩৪ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলারে। ১৬ নভেম্বর ৬৯ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করায় রিজার্ভ দাঁড়ায় ৩৪ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলারে, ১৭ নভেম্বর আবারও বেড়ে ৩৪ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার হয়। পরে তা কমে সোমবার (২১ নভেম্বর) রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩৪ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলারে।

আইএমএফ বলছে, রিজার্ভ থেকে অর্থ নিয়ে আলাদাভাবে বিভিন্ন তহবিল গঠন ও সেখান থেকে ঋণ দেওয়া হচ্ছে। আবার সেসব অর্থ রিজার্ভে দেখানো হচ্ছে। এতে রিজার্ভ বেশি দেখানো হচ্ছে বাংলাদেশর, যা বিভ্রান্তি তৈরি করছে। রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) সরবরাহ করা ৭ বিলিয়ন এবং শ্রীলঙ্কাকে দেওয়া ২০ কোটি ডলার দেশের রিজার্ভে দেখাচ্ছে। তাছাড়া গ্রিন ট্রান্সফরমেশন ফান্ড (জিটিএফ) ২০ কোটি, লং টার্ম ফিন্যান্সিং ফ্যাসিলিটি (এলটিএফএফ) তহবিলে ৩ কোটি ৮৫ লাখ, সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিমানকে ৪ কোটি ৮০ লাখ এবং ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইটিএফসি) আমানত রিজার্ভে দেখাচ্ছে।

আইএমএফের মতে, সবমিলিয়ে বর্তমানে রিজার্ভে যে অর্থ দেখানো হচ্ছে, সেখান থেকে ৮ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার বাদ যাবে। সে হিসাবে সোমবার দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ মজুত দাঁড়ায় ২৫ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলারে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রতিনিয়ত ওঠানামা করে। এখান থেকে সরকারি ক্রয়ে ডলার ছাড় করা হয়। আবার প্রবাসী বাংলাদেশিরা প্রতিনিয়ত রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। এক্ষেত্রে বলা যায় প্রতিদিনই রিজার্ভ কম-বেশি হয়। তবে আমাদের যে রিজার্ভ পজিশন সেটিতে ভয়ের কিছু নেই।

অন্যদিকে, নভেম্বরের প্রথম ১৮ দিনে প্রায় ১০৬ কোটি (১০৫ কোটি ৯৯ লাখ) ডলার বা ১ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। প্রতি ডলার ১০৮ টাকা হিসাবে এর পরিমাণ প্রায় সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা। প্রবাসী আয়ের এ ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি নভেম্বরের পুরো সময়ে ১৭৬ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে।

নভেম্বরের প্রথম ১৮ দিনে রাষ্ট্র মালিকানাধীন পাঁচ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে ১৮ কোটি ৮২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। আর বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৮৪ কোটি ৩৯ লাখ ডলার, বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩৭ লাখ ডলার এবং বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে দুই কোটি ৩৯ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স। এ সময়ে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে ইসলামী ব্যাংকের (২৭ কোটি ২২ লাখ ডলার) মাধ্যমে। এছাড়া অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৭ কোটি ৩৬ লাখ ডলার, ডাচ্–বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার, সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ৬ কোটি ৪২ লাখ এবং আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে ৫ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।

তবে, এ সময়ে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি বিডিবিএল, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, বিদেশি হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমে।

বৈধ উপায়ে ওয়েজ আর্নার্স রেমিট্যান্সের বিপরীতে আড়াই শতাংশ নগদ প্রণোদনা, রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের সিআইপি সম্মাননা, অনিবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিনিয়োগ ও গৃহায়ন অর্থায়ন সুবিধা দেওয়াসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাছাড়া রিজার্ভ ও রেমিট্যান্স বাড়াতে হুন্ডি প্রতিরোধের নতুন কৌশলে নিয়েছে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন প্রতিরোধে গঠিত আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট বা বিএফআইইউ। হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্সে পাঠানোয় জড়িত অভিযোগে ২৩০ জন বেনিফিশিয়ারির হিসাব সাময়িকভাবে উত্তোলন স্থগিত করে আর্থিক সংস্থাটি। পরে বৈধপথের প্রতিশ্রুতিতে এসব হিসাবগুলো পুনরায় খুলে দেওয়ার কথা জানানো হয়।

Facebook Comments Box

শেয়ার দিয়ে সাথেই থাকুন

print sharing button
এ বিভাগের অন্যান্য খবর