ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৯/১১ হামলা : প্রাক-বিচারিক সমঝোতা চুক্তি প্রত্যাহার

  • পোষ্ট হয়েছে : ০৩:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৪
  • / ৬০ বার দেখা হয়েছে

প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমেরিকায় ভয়াবহ হামলা চালায় জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদা। এই হামলায় অভিযুক্ত তিনজন তাদের দোষ স্বীকার করতে রাজি হয়েছে মৃত্যুদণ্ড না দেওয়ার শর্তে। এ নিয়ে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে ওই তিন অভিযুক্ত। মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছিল ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

তবে মার্কিন প্রতিরক্ষাসচিব অস্টিন লয়েড প্রাক-বিচারিক সমঝোতা চুক্তিটি প্রত্যাহার করেছেন। 

শুক্রবার একটি স্মারকলিপিতে অস্টিন বলেন, সামরিক আদালতের তত্ত্বাবধানকারী এক কর্মকর্তার কর্তৃত্ব প্রত্যাহার করছেন। তিনি গত বুধবার ওই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন। এই চুক্তির অধীনে কথিত হামলাকারীরা মৃত্যুদণ্ড থেকে রেহাই পেত।

এ ঘটনার পর কিছু ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার চুক্তিটির সমালোচনা করে। এ পরেই এই সিদ্ধান্ত নেন তিনি। 

স্মারকলিপিতে ষড়যন্ত্রের কথিত মূল হোতা খালিদ শেখ মোহাম্মদসহ পাঁচজন আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। যাদের সবাই গুয়ানতানামো বেতে বন্দি।

মূল চুক্তিতে তিনজনের নাম ছিল। 

অস্টিন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুসান এসকেলিয়ারকে লিখেছেন, ‘আমি স্থির করেছি অভিযুক্তের সঙ্গে প্রাক-বিচারিক সমঝোতা চুক্তিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ হিসেবে আমার দায়িত্ব থাকা উচিত।’ তিনি আরো বলেন, ‘অবিলম্বে কার্যকরভাবে আমার কর্তৃত্ব প্রয়োগে আমি এই চুক্তি প্রত্যাহার করছি।’ তবে হোয়াইট হাউস বুধবার বলেছে, তারা আবেদন চুক্তিতে কোনো ভূমিকা পালন করেনি।

স্মারকলিপিতে যাদের নাম রয়েছে তারা হলেন-  খালিদ শেখ মোহাম্মদ (কে এস এম নামে পরিচিত), ওয়ালিদ মুহাম্মদ সালিহ মুবারক বিন আত্তাশ, মুস্তফা আহমেদ আদম আল-হাওসাভি।

অন্য দুইজনের নাম মূল আবেদনে উল্লেখ করা হয়নি, তারা হলেন- রামজি বিন আল-শিব এবং আলী আব্দুল আজিজ আলী। অভিযুক্তরা সবাই কয়েক দশক ধরে বিনা বিচারে হেফাজতে রয়েছেন। 

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা করা হয়। এদিন হামলাকারীরা যাত্রীবাহী বিমান ছিনতাই করে নিউ ইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার এবং ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর পেন্টাগনে হামলা চালায়।  চতুর্থ বিমানটি পেনসিলভানিয়ার একটি মাঠে বিধ্বস্ত হয়।

এসব ঘটনায় নিউ ইয়র্ক, ভার্জিনিয়া ও পেনসিলভানিয়ায় প্রায় তিন হাজার মানুষ নিহত হয়। এই হামলার পরপরই বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে আমেরিকা। আফগানিস্তান ও ইরাকে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র।

১৯৪১ সালে হাওয়াই অঙ্গরাজ্যের পার্ল হারবারে জাপানি হামলার পর ১১ সেপ্টেম্বরের ঘটনাই ছিল যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলার ঘটনা। অভিযুক্তদের মধ্যে খালিদ শেখ মোহাম্মদকে নাইন-ইলেভেন হামলার পরিকল্পনাকারী সেবে বিবেচনা করা হয়।

নিউ ইয়র্ক টাইমসের বরাতে বিবিসি লিখেছে, দুই যুগ আগের সেই হামলায় যারা প্রাণ হারিয়েছিল, তাদের স্বজনদের কাছে কৌঁসুলিরা চিঠি পাঠানোর পর প্রাক-বিচার চুক্তির বিষয়টি প্রকাশ পায়।

সূত্র : বিবিসি

ট্যাগ :

শেয়ার দিয়ে সাথেই থাকুন

৯/১১ হামলা : প্রাক-বিচারিক সমঝোতা চুক্তি প্রত্যাহার

পোষ্ট হয়েছে : ০৩:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৪

প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমেরিকায় ভয়াবহ হামলা চালায় জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদা। এই হামলায় অভিযুক্ত তিনজন তাদের দোষ স্বীকার করতে রাজি হয়েছে মৃত্যুদণ্ড না দেওয়ার শর্তে। এ নিয়ে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে ওই তিন অভিযুক্ত। মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছিল ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

তবে মার্কিন প্রতিরক্ষাসচিব অস্টিন লয়েড প্রাক-বিচারিক সমঝোতা চুক্তিটি প্রত্যাহার করেছেন। 

শুক্রবার একটি স্মারকলিপিতে অস্টিন বলেন, সামরিক আদালতের তত্ত্বাবধানকারী এক কর্মকর্তার কর্তৃত্ব প্রত্যাহার করছেন। তিনি গত বুধবার ওই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন। এই চুক্তির অধীনে কথিত হামলাকারীরা মৃত্যুদণ্ড থেকে রেহাই পেত।

এ ঘটনার পর কিছু ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার চুক্তিটির সমালোচনা করে। এ পরেই এই সিদ্ধান্ত নেন তিনি। 

স্মারকলিপিতে ষড়যন্ত্রের কথিত মূল হোতা খালিদ শেখ মোহাম্মদসহ পাঁচজন আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। যাদের সবাই গুয়ানতানামো বেতে বন্দি।

মূল চুক্তিতে তিনজনের নাম ছিল। 

অস্টিন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুসান এসকেলিয়ারকে লিখেছেন, ‘আমি স্থির করেছি অভিযুক্তের সঙ্গে প্রাক-বিচারিক সমঝোতা চুক্তিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ হিসেবে আমার দায়িত্ব থাকা উচিত।’ তিনি আরো বলেন, ‘অবিলম্বে কার্যকরভাবে আমার কর্তৃত্ব প্রয়োগে আমি এই চুক্তি প্রত্যাহার করছি।’ তবে হোয়াইট হাউস বুধবার বলেছে, তারা আবেদন চুক্তিতে কোনো ভূমিকা পালন করেনি।

স্মারকলিপিতে যাদের নাম রয়েছে তারা হলেন-  খালিদ শেখ মোহাম্মদ (কে এস এম নামে পরিচিত), ওয়ালিদ মুহাম্মদ সালিহ মুবারক বিন আত্তাশ, মুস্তফা আহমেদ আদম আল-হাওসাভি।

অন্য দুইজনের নাম মূল আবেদনে উল্লেখ করা হয়নি, তারা হলেন- রামজি বিন আল-শিব এবং আলী আব্দুল আজিজ আলী। অভিযুক্তরা সবাই কয়েক দশক ধরে বিনা বিচারে হেফাজতে রয়েছেন। 

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা করা হয়। এদিন হামলাকারীরা যাত্রীবাহী বিমান ছিনতাই করে নিউ ইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার এবং ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর পেন্টাগনে হামলা চালায়।  চতুর্থ বিমানটি পেনসিলভানিয়ার একটি মাঠে বিধ্বস্ত হয়।

এসব ঘটনায় নিউ ইয়র্ক, ভার্জিনিয়া ও পেনসিলভানিয়ায় প্রায় তিন হাজার মানুষ নিহত হয়। এই হামলার পরপরই বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে আমেরিকা। আফগানিস্তান ও ইরাকে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র।

১৯৪১ সালে হাওয়াই অঙ্গরাজ্যের পার্ল হারবারে জাপানি হামলার পর ১১ সেপ্টেম্বরের ঘটনাই ছিল যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলার ঘটনা। অভিযুক্তদের মধ্যে খালিদ শেখ মোহাম্মদকে নাইন-ইলেভেন হামলার পরিকল্পনাকারী সেবে বিবেচনা করা হয়।

নিউ ইয়র্ক টাইমসের বরাতে বিবিসি লিখেছে, দুই যুগ আগের সেই হামলায় যারা প্রাণ হারিয়েছিল, তাদের স্বজনদের কাছে কৌঁসুলিরা চিঠি পাঠানোর পর প্রাক-বিচার চুক্তির বিষয়টি প্রকাশ পায়।

সূত্র : বিবিসি