প্রথমবার্তা, প্রতিবেদকঃ রাজধানীর কলাবাগানের তেঁতুলতলা খেলার মাঠে পুলিশের থানা ভবন নির্মাণ কাজের বিরোধিতা করায় সমাজকর্মী সৈয়দা রত্না ও তার কিশোর ছেলেকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে দ্রুতই তাদের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন মানবাধিকার কর্মীরা। তাদের মতে, খেলার মাঠ দখলের বিরোধিতা করায় হেনস্থা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
খেলার মাঠে স্থাপনা নির্মানের বিরোধিতা করায় সমাজকর্মী সাইদা রত্নাকে এভাবেই সবার সামনেই টেনে হিঁচড়ে গাড়িতে তোলে কলাবাগান থানা পুলিশ। মায়ের আটকের খবর শুনে কিশোর ছেলে দৌড়ে এলে তাকেও রেহাই দেয়নি।
এর আগে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ফেসবুকে লাইভ করেন রত্না। কয়েক দিন আগেও তেঁতুলতলা মাঠের আশেপাশের বাড়ির নারীরা নিজেরাই পুলিশের মাঠ দখলের প্রতিবাদ জানান। খেলার মাঠে থানা ভবন নির্মাণের এই বিরোধিতা কয়েকমাস ধরেই চলছে। এর আগে মাঠে খেলতে আসায় কয়েক শিশুও পুলিশি হয়রানির শিকার হয়।
স্থানীয় একজন বলেন, এটি মাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সেখানে কেনো থানা কর্তৃপক্ষ এই জায়গাকেই বেছে নিয়েছে বুঝতে পারছি না।
মাঠ দখলের বিরোধিতা করায় সাধারণ নাগরিককে হয়রানির প্রতিবাদে তেঁতুলতলায় জড়ো হন পরিবেশবাদী, সাংস্কৃতিক ও মানবাধিকারকর্মীরা। মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির বলেন, কোনভাবেই এখানে কোনো বিল্ডিং বা জায়গা দখল করা যাবে না। এখানে পুলিশ কোর্টের অর্ডার অমান্য করলে সেটা দুঃখজনক।
বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখার আহ্বান জানাচ্ছি এবং আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমরা একটা সুষ্ঠু সমাধানের মধ্যে পৌছাবো সে পর্যন্ত যেনো এ নির্মাণ কাজ অবশ্যই বন্ধ থাকে।
পরে রত্না ও তার সন্তানের খোঁজে সবাই যান থানায়। চেষ্টা করেন পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে।
রত্নার মেয়ে সেউতি সাগুফতা বলেন, পুলিশরা এসে তাকে (মা) থামিয়েছে, বাধা দিয়েছে। এক কথায়, দুই কথায় তার কাছ থেকে মোবাইল কাড়াকাড়ি করে এবং প্রায় ২০-২৫ জন মহিলা পুলিশ ধরে ওনাকে পুলিশ ভ্যানে তুলে নেয়।
দিনভর নানা নাটকীয়তা চললেও, দায়িত্বপ্রাপ্ত কেউ কথা বলতে চাননি। পরে সবার প্রতিবাদের মুখে ডিউটি অফিসার স্বীকার করেন রত্না ও তার ছেলে আটক আছেন।
কলাবাগান থানার ডিউটি অফিসার মিজানুর রহমান বলেন, হ্যাঁ উনি আছেন, ভালো আছেন। আমাদের হেফাজতেই আছেন। যারা ডিউটিতে আছেন ওনার বলতে পারবেন যে কি ধরনের সমস্যা হয়েছিল।
তবে কেন আটক করা হয়েছে তার সদুত্তর মেলেনি।