ঢাকা , শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রেকর্ড দাম ছোঁয়া খুচরা ডলারে স্বস্তি ফিরছে

  • পোষ্ট হয়েছে : ১২:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৩৮ বার দেখা হয়েছে

প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: দেশে গত বছরের মার্চ থেকে ডলারের চাহিদা বেড়েছে। এখনও চলছে আন্তর্জাতিক মুদ্রাটির সেই সংকট। সদ্য বিদায়ী বছরের সেপ্টেম্বরে খুচরা বাজারে ডলারের সর্বোচ্চ রেকর্ড বিক্রয়মূল্য ছিলো ১২০ টাকা। কয়েক মাসের ব্যবধানে দাম কিছুটা কমে প্রতি ডলার এখন বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা ৩৫ পয়সা।

মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) রাজধানীর খুচরা ডলার বিক্রির বিভিন্ন হাউজ ঘুরে এ তথ্য জানা যায়।

তথ্য অনুযায়ী, খুচরা বাজারে প্রতি ডলার ক্রয় করা হচ্ছে ১১০ টাকা ১০ পয়সা। এসময় ডলার বিক্রি হচ্ছিলো ১১০ টাকা ৩৫ পয়সায়। এর আগে রোববার (২২ জানুয়ারি) ১০৯ টাকা ৮০ পয়সায় ডলার বিক্রি হয়েছিলো। এদিন ক্রয় করা হয় ১০৯ টাকা ৭০ পয়সায়।

আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি ও ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় গত বছরের মার্চ থেকে দেশে ডলারের চাহিদা বাড়ে। ব্যাপকহারে ডলারের দাম বাড়ার পরেও সংকট মেটেনি। আন্তর্জাতিক এই মুদ্রাটির দাম বাড়ার ফলে বেড়েছে টাকার চাহিদা। এদিকে ব্যাংকগুলোকে টাকা দিয়ে ডলার কিনে আমদানি বিল পরিশোধ করতে হয়। ফলে ডলার কিনতে গিয়েই অনেক ব্যাংক টাকার সংকটে পড়ে গেছে।

এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে ইসলামি ধারার পাঁচ ব্যাংকের অনিয়ম আলোচনায় আসে। এর ফলে গ্রাহকদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এতে গত বছরের নভেম্বরে ব্যাংক খাতের আমানত কমেছে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা।

এসবের মধ্যে খাড়ার ঘা হয়ে দাড়িয়েছে মূল্যস্ফীতি। খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে অনেকেই। অনেকে খরচ মেটাতে সঞ্চয় ভেঙে ফেলছেন। ব্যাংক খাতে গত সেপ্টেম্বরে আমানতের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ। আর ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ১১ দশমিক ৮৫ শতাংশ। এদিকে গত নভেম্বরে আমানতের প্রবৃদ্ধি কমে দাড়ায় ৬ দশমিক ৬৮ শতাংশ ও ঋণের প্রবৃদ্ধি ১০ দশমিক ৯৩ শতাংশ। অর্থাৎ ব্যাংকের আমানতের চেয়ে ঋণ যাচ্ছে অনেক বেশি।

করোনার পরে অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠতে শুরু করে দেশ। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যাপক অস্থিরতা শুরু হয়। বিশ্ববাজারে ডলারের দাম হু হু করে বাড়তে থাকে। দেশের বিভিন্ন সিন্ডিকেট দল গত সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে ডলারের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে। এর ফলে বিপাকে পড়েন বিদেশগামীরা। বিভিন্ন কৌশলে অবৈধ ব্যবসায়ীরা ডলার ব্যবসা দখলে নেন। তখন আমদানিকারকদের গুণতে হয়েছিলো বাড়তি খরচ।

 

এরপরে বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু উদ্যোগে ডলারের দামে কিছুটা স্বস্তি ফিরতে শুরু করে। একইসঙ্গে অন্য ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি অব্যাহত রাখে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। গত ২০২২ সালে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ব্যাংকগুলোর কাছে সব মিলিয়ে ১ হাজার ২৬১ কোটি ডলার বিক্রি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতি ডলার ৯৮ টাকা ধরলে যার পরিমাণ দাঁড়ায় ১ লাখ ২৩ হাজার ৫৭৮ কোটি টাকা। এর ফলে ব্যাপক হারে কমে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।

ট্যাগ :

শেয়ার দিয়ে সাথেই থাকুন

রেকর্ড দাম ছোঁয়া খুচরা ডলারে স্বস্তি ফিরছে

পোষ্ট হয়েছে : ১২:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৩

প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: দেশে গত বছরের মার্চ থেকে ডলারের চাহিদা বেড়েছে। এখনও চলছে আন্তর্জাতিক মুদ্রাটির সেই সংকট। সদ্য বিদায়ী বছরের সেপ্টেম্বরে খুচরা বাজারে ডলারের সর্বোচ্চ রেকর্ড বিক্রয়মূল্য ছিলো ১২০ টাকা। কয়েক মাসের ব্যবধানে দাম কিছুটা কমে প্রতি ডলার এখন বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা ৩৫ পয়সা।

মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) রাজধানীর খুচরা ডলার বিক্রির বিভিন্ন হাউজ ঘুরে এ তথ্য জানা যায়।

তথ্য অনুযায়ী, খুচরা বাজারে প্রতি ডলার ক্রয় করা হচ্ছে ১১০ টাকা ১০ পয়সা। এসময় ডলার বিক্রি হচ্ছিলো ১১০ টাকা ৩৫ পয়সায়। এর আগে রোববার (২২ জানুয়ারি) ১০৯ টাকা ৮০ পয়সায় ডলার বিক্রি হয়েছিলো। এদিন ক্রয় করা হয় ১০৯ টাকা ৭০ পয়সায়।

আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি ও ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় গত বছরের মার্চ থেকে দেশে ডলারের চাহিদা বাড়ে। ব্যাপকহারে ডলারের দাম বাড়ার পরেও সংকট মেটেনি। আন্তর্জাতিক এই মুদ্রাটির দাম বাড়ার ফলে বেড়েছে টাকার চাহিদা। এদিকে ব্যাংকগুলোকে টাকা দিয়ে ডলার কিনে আমদানি বিল পরিশোধ করতে হয়। ফলে ডলার কিনতে গিয়েই অনেক ব্যাংক টাকার সংকটে পড়ে গেছে।

এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে ইসলামি ধারার পাঁচ ব্যাংকের অনিয়ম আলোচনায় আসে। এর ফলে গ্রাহকদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এতে গত বছরের নভেম্বরে ব্যাংক খাতের আমানত কমেছে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা।

এসবের মধ্যে খাড়ার ঘা হয়ে দাড়িয়েছে মূল্যস্ফীতি। খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে অনেকেই। অনেকে খরচ মেটাতে সঞ্চয় ভেঙে ফেলছেন। ব্যাংক খাতে গত সেপ্টেম্বরে আমানতের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ। আর ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ১১ দশমিক ৮৫ শতাংশ। এদিকে গত নভেম্বরে আমানতের প্রবৃদ্ধি কমে দাড়ায় ৬ দশমিক ৬৮ শতাংশ ও ঋণের প্রবৃদ্ধি ১০ দশমিক ৯৩ শতাংশ। অর্থাৎ ব্যাংকের আমানতের চেয়ে ঋণ যাচ্ছে অনেক বেশি।

করোনার পরে অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠতে শুরু করে দেশ। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যাপক অস্থিরতা শুরু হয়। বিশ্ববাজারে ডলারের দাম হু হু করে বাড়তে থাকে। দেশের বিভিন্ন সিন্ডিকেট দল গত সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে ডলারের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে। এর ফলে বিপাকে পড়েন বিদেশগামীরা। বিভিন্ন কৌশলে অবৈধ ব্যবসায়ীরা ডলার ব্যবসা দখলে নেন। তখন আমদানিকারকদের গুণতে হয়েছিলো বাড়তি খরচ।

 

এরপরে বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু উদ্যোগে ডলারের দামে কিছুটা স্বস্তি ফিরতে শুরু করে। একইসঙ্গে অন্য ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি অব্যাহত রাখে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। গত ২০২২ সালে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ব্যাংকগুলোর কাছে সব মিলিয়ে ১ হাজার ২৬১ কোটি ডলার বিক্রি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতি ডলার ৯৮ টাকা ধরলে যার পরিমাণ দাঁড়ায় ১ লাখ ২৩ হাজার ৫৭৮ কোটি টাকা। এর ফলে ব্যাপক হারে কমে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।