ঢাকা , শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৩০ হাজার ছাড়িয়েছে তুরস্ক-সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃত্যুর সংখ্যা

  • পোষ্ট হয়েছে : ১১:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ৪৫ বার দেখা হয়েছে

প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: তুরস্ক-সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পের সপ্তম দিন আজ। এখন পর্যন্ত দুই দেশে ৩০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে বাঁচার আশা করছেন অনেকেই। হাজার হাজার মানুষ এখনো আটকে আছেন। আহত হয়েছেন প্রায় এক লাখ মানুষ। উদ্ধার অভিযান চলছে পুরোদমে।

 

শুধু তুরস্কে মৃতের সংখ্যা প্রায় ২৫ হাজার। সিরিয়ায় মৃত্যু হয়েছে ৫ হাজারের বেশি মানুষ। খবর ফোর্বসের জাতিসংঘ বলেছে, ভূমিকম্পের পরে সিরিয়ায় ৫৩ লাখ মানুষ গৃহহীন হতে পারে। এখন তুরস্ক ও সিরিয়ায় প্রায় ৯ লাখ লোকের জরুরি খাদ্যের (গরম খাবারের) প্রয়োজন রয়েছে।

 

সিরিয়ার সরকার তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত এলাকায় মানবিক সহায়তা বিতরণের অনুমোদন দিয়েছে। এর আগে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বলেন, ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা দেশের ধ্বংসাত্মক ১৯৯৯ সালের ভূমিকম্পের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে।

 

এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডব্লিউএইচওর কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, নিহত মানুষের সংখ্যা আরও বাড়বে। তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনাবিষয়ক কর্তৃপক্ষ এএফইডি জানিয়েছে, ছয় হাজারের বেশি ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গাজিয়ান্তেপ শহর। ভূমিকম্পের পরে এক হাজার ৭০০ আফটারশক রেকর্ড করা হয়েছে।

 

গত সোমবার ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে এই ৭.৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে। বেশিরভাগ মানুষ তখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিল। বহুতল ভবন ধসে পড়ে ঘুমন্ত মানুষের ওপর। মোমের মতো ধসে পড়েছে একাধিক ভবন। ভয়াবহ এ ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ার বিস্তৃত এলাকা মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। মিসর, লেবানন ও সাইপ্রাস থেকেও কম্পন অনুভূত হয়েছে।

 

ডব্লিউএইচওর শীর্ষ কর্মকর্তা অ্যাডেলহেইড মার্শাং বলেন, ‘ভূমিকম্প যেসব অঞ্চলে সংঘটিত হয়েছে, তার মানচিত্র অনুসারে বলা যায়, দুই কোটি ৩০ লাখ মানুষ এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এদের মধ্যে ৫০ লাখ মানুষ অরক্ষিত অবস্থায় আছে।

 

তিনি আরও বলেন, তুরস্ক এবং উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার ভূমিকম্পকবলিত অঞ্চলে বেসামরিক অবকাঠামো ও স্বাস্থ্য সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অবকাঠামোগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

 

জেনেভায় ডব্লিউএইচওর নির্বাহী কমিটিকে মার্শাং বলেছেন, ‘ডব্লিউএইচও মনে করে যে সিরিয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে বিভিন্ন জরুরি পণ্যের অভাব দেখা দেবে। এমনকি দেশটিতে মধ্যমেয়াদি সময়ের জন্য আরও এমন সমস্যা দেখা দিতে পারে।

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওই অঞ্চলে কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস পর্যন্ত আফটারশক হতে পারে।  সিএনএনের আবহাওয়াবিদ ক্যারেন ম্যাগিনিস বলেন, ভূ-কম্পনের বৈশিষ্ট্যের কারণে আফটারশক পরের কয়েক সপ্তাহ, এমনকি কয়েক মাস পর্যন্তও অনুভূত হতে পারে।

 

প্রায় ১০০ দেশ এরই মধ্যে তুরস্ক ও সিরিয়ায় উদ্ধারকারী দলসহ বিভিন্ন সাহায্য পাঠিয়েছে। পুরোদমে চলছে উদ্ধারকাজ। শুধু তুরস্কে ১০টি প্রদেশে ক্ষতি হয়েছে। এখনো অনেক জায়গায় পৌঁছতে পারেননি উদ্ধারকারী দল।

ট্যাগ :

শেয়ার দিয়ে সাথেই থাকুন

৩০ হাজার ছাড়িয়েছে তুরস্ক-সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃত্যুর সংখ্যা

পোষ্ট হয়েছে : ১১:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: তুরস্ক-সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পের সপ্তম দিন আজ। এখন পর্যন্ত দুই দেশে ৩০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে বাঁচার আশা করছেন অনেকেই। হাজার হাজার মানুষ এখনো আটকে আছেন। আহত হয়েছেন প্রায় এক লাখ মানুষ। উদ্ধার অভিযান চলছে পুরোদমে।

 

শুধু তুরস্কে মৃতের সংখ্যা প্রায় ২৫ হাজার। সিরিয়ায় মৃত্যু হয়েছে ৫ হাজারের বেশি মানুষ। খবর ফোর্বসের জাতিসংঘ বলেছে, ভূমিকম্পের পরে সিরিয়ায় ৫৩ লাখ মানুষ গৃহহীন হতে পারে। এখন তুরস্ক ও সিরিয়ায় প্রায় ৯ লাখ লোকের জরুরি খাদ্যের (গরম খাবারের) প্রয়োজন রয়েছে।

 

সিরিয়ার সরকার তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত এলাকায় মানবিক সহায়তা বিতরণের অনুমোদন দিয়েছে। এর আগে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বলেন, ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা দেশের ধ্বংসাত্মক ১৯৯৯ সালের ভূমিকম্পের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে।

 

এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডব্লিউএইচওর কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, নিহত মানুষের সংখ্যা আরও বাড়বে। তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনাবিষয়ক কর্তৃপক্ষ এএফইডি জানিয়েছে, ছয় হাজারের বেশি ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গাজিয়ান্তেপ শহর। ভূমিকম্পের পরে এক হাজার ৭০০ আফটারশক রেকর্ড করা হয়েছে।

 

গত সোমবার ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে এই ৭.৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে। বেশিরভাগ মানুষ তখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিল। বহুতল ভবন ধসে পড়ে ঘুমন্ত মানুষের ওপর। মোমের মতো ধসে পড়েছে একাধিক ভবন। ভয়াবহ এ ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ার বিস্তৃত এলাকা মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। মিসর, লেবানন ও সাইপ্রাস থেকেও কম্পন অনুভূত হয়েছে।

 

ডব্লিউএইচওর শীর্ষ কর্মকর্তা অ্যাডেলহেইড মার্শাং বলেন, ‘ভূমিকম্প যেসব অঞ্চলে সংঘটিত হয়েছে, তার মানচিত্র অনুসারে বলা যায়, দুই কোটি ৩০ লাখ মানুষ এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এদের মধ্যে ৫০ লাখ মানুষ অরক্ষিত অবস্থায় আছে।

 

তিনি আরও বলেন, তুরস্ক এবং উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার ভূমিকম্পকবলিত অঞ্চলে বেসামরিক অবকাঠামো ও স্বাস্থ্য সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অবকাঠামোগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

 

জেনেভায় ডব্লিউএইচওর নির্বাহী কমিটিকে মার্শাং বলেছেন, ‘ডব্লিউএইচও মনে করে যে সিরিয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে বিভিন্ন জরুরি পণ্যের অভাব দেখা দেবে। এমনকি দেশটিতে মধ্যমেয়াদি সময়ের জন্য আরও এমন সমস্যা দেখা দিতে পারে।

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওই অঞ্চলে কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস পর্যন্ত আফটারশক হতে পারে।  সিএনএনের আবহাওয়াবিদ ক্যারেন ম্যাগিনিস বলেন, ভূ-কম্পনের বৈশিষ্ট্যের কারণে আফটারশক পরের কয়েক সপ্তাহ, এমনকি কয়েক মাস পর্যন্তও অনুভূত হতে পারে।

 

প্রায় ১০০ দেশ এরই মধ্যে তুরস্ক ও সিরিয়ায় উদ্ধারকারী দলসহ বিভিন্ন সাহায্য পাঠিয়েছে। পুরোদমে চলছে উদ্ধারকাজ। শুধু তুরস্কে ১০টি প্রদেশে ক্ষতি হয়েছে। এখনো অনেক জায়গায় পৌঁছতে পারেননি উদ্ধারকারী দল।