ঢাকা , শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইসরায়েলি বাহিনী প্রবল প্রতিরোধের মুখে পিছু হটল

  • পোষ্ট হয়েছে : ০৫:২৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৩
  • / ৪৭ বার দেখা হয়েছে

প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার উপকণ্ঠে হামাস যোদ্ধাদের সঙ্গে সোমবার তীব্র লড়াই হয়েছে অনুপ্রবেশকারী ইসরায়েলি বাহিনীর। তবে প্রবল প্রতিরোধের মুখে ইহুদিবাদী সেনারা পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে।

 

অন্যদিকে রাশিয়ার মুসলিমপ্রধান দাগেস্তান অঞ্চলের একটি বিমানবন্দরে ইসরায়েল থেকে আসা একটি উড়োজাহাজ অবতরণের পর কয়েকশ উত্তেজিত জনতা সেখানে হামলা চালিয়েছে।

 

তারা ইহুদিদের খুঁজে খুঁজে বের করার চেষ্টা করে। এদিকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ৮ হাজার ৩০০ ছাড়িয়ে গেছে। খবর আলজাজিরা, বিবিসি ও এএফপির।

 

ফিলিস্তিনি একাধিক সূত্র আলজাজিরাকে বলেছে, ইসরায়েলি ট্যাঙ্কগুলো গাজার সীমান্ত বেষ্টনী থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে গাজা শহরের মধ্যবর্তী সালাহ আল-দিন সড়কের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় হামলার শিকার হয়েছে। পরে ওই এলাকায় হামাসের যোদ্ধাদের সঙ্গে ইসরায়েলি সেনাদের তীব্র লড়াই হয়।

 

গাজায় হামাসের সরকারি অফিসের প্রধান কর্মকর্তা সালমা মারুফ এক বিবৃতিতে বলেছেন, গাজা উপত্যকার আবাসিক এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর কোনো স্থল অভিযান নেই।

 

সালাহ আল-দিন সড়কে শুধু দখলদার সেনাবাহিনীর কয়েকটি ট্যাঙ্ক এবং একটি বুলডোজারের অনুপ্রবেশ ঘটেছিল। পরে হামাসের যোদ্ধাদের প্রতিরোধে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে ইসরায়েলি সব যানবাহন।

 

গত রোববার ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ৬০০ স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। এতে বহু হতাহত হয়েছে।

 

হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, উপত্যকায় নিহতের সংখ্যা ৮ হাজার ৩০৬-এ পৌঁছেছে। আহত ২১ হাজার ৪৮ জন। এ ছাড়া অধিকৃত পশ্চিম তীরে ১১৯ জন নিহত এবং এক হাজার ৯৬০ জন আহত হয়েছে। গাজায় ১২৪ জন চিকিৎসা কর্মী নিহত এবং ২৫টি অ্যাম্বুলেন্স অকেজো হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া ৩২টি মেডিকেল সেন্টার বন্ধ হয়ে গেছে।

 

গাজায় শিশুমৃত্যুর রেকর্ড

সেভ দ্য চিলড্রেন জানিয়েছে, ২০১৯ সাল থেকে প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে সংঘাতে মোট যত শিশু নিহত হয়েছে, তার চেয়ে গত তিন সপ্তাহে গাজায় বেশি সংখ্যক শিশু হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গাজায় নিহতের মধ্যে ৪০ শতাংশ শিশু এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক।

 

ইসরায়েলের বোমা হামলায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার ৪৭টি মসজিদ ধ্বংস হয়ে গেছে। এ ছাড়া ধ্বংস হয়েছে ৭টি গির্জাও। ইসরায়েলের নির্বিচার এই হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না স্কুল, হাসপাতালের মতো বেসামরিক অবকাঠামো। গত তিন সপ্তাহ ধরে চলা এসব হামলায় ২০৩টি স্কুল এবং ৮০টি সরকারি অফিস ধ্বংস করা হয়েছে। গাজার মিডিয়া অফিসের পরিচালক সালমা মারুফ বলেন, ব্যাপক বোমা হামলার কারণে গাজার ২ লাখ ২০ হাজার আবাসন ইউনিট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ৩২ হাজার ভবন সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে।

 

হিজবুল্লাহর যুদ্ধে নতুন অস্ত্র

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বলেছেন, ইসরায়েল গাজায় রেড লাইন অতিক্রম করেছে, যা অন্যদের পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করতে পারে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে গাজায় নিহতের সংখ্যা বাড়তে থাকলে ইরান যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে।

 

 

এদিকে ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ গাজা যুদ্ধ শুরুর পর প্রথমবারের মতো একটি ইসরায়েলি ড্রোনকে গুলি করার জন্য একটি সারফেস টু এয়ার মিসাইল (ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র) চালু করেছে।

 

এর মানে হচ্ছে, হিজবুল্লাহ ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে চ্যালেঞ্জ করার একটি নতুন পর্ব শুরু করছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস আবারও জোর দিয়ে বলেছেন, ইসরায়েল বা গাজায় সেনা পাঠানোর কোনো ইচ্ছা নেই তাঁর দেশের।

ট্যাগ :

শেয়ার দিয়ে সাথেই থাকুন

ইসরায়েলি বাহিনী প্রবল প্রতিরোধের মুখে পিছু হটল

পোষ্ট হয়েছে : ০৫:২৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৩

প্রথমবার্তা, প্রতিবেদক: অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার উপকণ্ঠে হামাস যোদ্ধাদের সঙ্গে সোমবার তীব্র লড়াই হয়েছে অনুপ্রবেশকারী ইসরায়েলি বাহিনীর। তবে প্রবল প্রতিরোধের মুখে ইহুদিবাদী সেনারা পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে।

 

অন্যদিকে রাশিয়ার মুসলিমপ্রধান দাগেস্তান অঞ্চলের একটি বিমানবন্দরে ইসরায়েল থেকে আসা একটি উড়োজাহাজ অবতরণের পর কয়েকশ উত্তেজিত জনতা সেখানে হামলা চালিয়েছে।

 

তারা ইহুদিদের খুঁজে খুঁজে বের করার চেষ্টা করে। এদিকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ৮ হাজার ৩০০ ছাড়িয়ে গেছে। খবর আলজাজিরা, বিবিসি ও এএফপির।

 

ফিলিস্তিনি একাধিক সূত্র আলজাজিরাকে বলেছে, ইসরায়েলি ট্যাঙ্কগুলো গাজার সীমান্ত বেষ্টনী থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে গাজা শহরের মধ্যবর্তী সালাহ আল-দিন সড়কের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় হামলার শিকার হয়েছে। পরে ওই এলাকায় হামাসের যোদ্ধাদের সঙ্গে ইসরায়েলি সেনাদের তীব্র লড়াই হয়।

 

গাজায় হামাসের সরকারি অফিসের প্রধান কর্মকর্তা সালমা মারুফ এক বিবৃতিতে বলেছেন, গাজা উপত্যকার আবাসিক এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর কোনো স্থল অভিযান নেই।

 

সালাহ আল-দিন সড়কে শুধু দখলদার সেনাবাহিনীর কয়েকটি ট্যাঙ্ক এবং একটি বুলডোজারের অনুপ্রবেশ ঘটেছিল। পরে হামাসের যোদ্ধাদের প্রতিরোধে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে ইসরায়েলি সব যানবাহন।

 

গত রোববার ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ৬০০ স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। এতে বহু হতাহত হয়েছে।

 

হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, উপত্যকায় নিহতের সংখ্যা ৮ হাজার ৩০৬-এ পৌঁছেছে। আহত ২১ হাজার ৪৮ জন। এ ছাড়া অধিকৃত পশ্চিম তীরে ১১৯ জন নিহত এবং এক হাজার ৯৬০ জন আহত হয়েছে। গাজায় ১২৪ জন চিকিৎসা কর্মী নিহত এবং ২৫টি অ্যাম্বুলেন্স অকেজো হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া ৩২টি মেডিকেল সেন্টার বন্ধ হয়ে গেছে।

 

গাজায় শিশুমৃত্যুর রেকর্ড

সেভ দ্য চিলড্রেন জানিয়েছে, ২০১৯ সাল থেকে প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে সংঘাতে মোট যত শিশু নিহত হয়েছে, তার চেয়ে গত তিন সপ্তাহে গাজায় বেশি সংখ্যক শিশু হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গাজায় নিহতের মধ্যে ৪০ শতাংশ শিশু এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক।

 

ইসরায়েলের বোমা হামলায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার ৪৭টি মসজিদ ধ্বংস হয়ে গেছে। এ ছাড়া ধ্বংস হয়েছে ৭টি গির্জাও। ইসরায়েলের নির্বিচার এই হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না স্কুল, হাসপাতালের মতো বেসামরিক অবকাঠামো। গত তিন সপ্তাহ ধরে চলা এসব হামলায় ২০৩টি স্কুল এবং ৮০টি সরকারি অফিস ধ্বংস করা হয়েছে। গাজার মিডিয়া অফিসের পরিচালক সালমা মারুফ বলেন, ব্যাপক বোমা হামলার কারণে গাজার ২ লাখ ২০ হাজার আবাসন ইউনিট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ৩২ হাজার ভবন সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে।

 

হিজবুল্লাহর যুদ্ধে নতুন অস্ত্র

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বলেছেন, ইসরায়েল গাজায় রেড লাইন অতিক্রম করেছে, যা অন্যদের পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করতে পারে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে গাজায় নিহতের সংখ্যা বাড়তে থাকলে ইরান যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে।

 

 

এদিকে ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ গাজা যুদ্ধ শুরুর পর প্রথমবারের মতো একটি ইসরায়েলি ড্রোনকে গুলি করার জন্য একটি সারফেস টু এয়ার মিসাইল (ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র) চালু করেছে।

 

এর মানে হচ্ছে, হিজবুল্লাহ ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে চ্যালেঞ্জ করার একটি নতুন পর্ব শুরু করছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস আবারও জোর দিয়ে বলেছেন, ইসরায়েল বা গাজায় সেনা পাঠানোর কোনো ইচ্ছা নেই তাঁর দেশের।