প্রথমবার্তা, আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মন্দার উদ্বেগ এবং শীর্ষ অপরিশোধিত আমদানিকারক চীনে কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের কারণে জ্বালানির চাহিদা কমে যাওয়ার আশঙ্কা বেড়েছে। এর ফলে মঙ্গলবার বিশ্বব্যাপী তেলের দাম কমেছে। খবর রয়টার্সের।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮৪ সেন্ট বা ০.৯ শতাংশ কমে ৯৭.০৮ ডলারে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি ইউএস ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের অপরিশোধিত তেলের দাম ৯০.৮৩ ডলার।

চীনের নেতারা দেশের কঠোর কোভিড-১৯ বিধিনিষেধ থেকে বেরিয়ে আসার কথা ভাবছেন, এমন প্রতিবেদনের মধ্যে সোমবার আগস্টের পর থেকে উভয় বেঞ্চমার্কই তাদের সর্বোচ্চ মাত্রায় উঠেছে। এদিকে গুয়াংজু এবং অন্যান্য চীনা শহরগুলিতে নতুন করোনভাইরাস সংক্রমণের কেস বেড়েছে। ফলে বিধিনিষেধ কমানোর দৃষ্টিভঙ্গি ম্লান হয়ে গিয়েছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে।

সিএমসি মার্কেট বিশ্লেষক টিনা টেং ড বলেন, বাজারে অংশগ্রহণকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতির দিকেও নজর রাখছে। একদিকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদের হার বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো অন্যদিকে তেলের দামের উত্থান-পতন। এতে বিশ্বজুড়ে মন্দার ঝুঁকি বাড়ছে।

পিভিএম বিশ্লেষক তামাস ভার্গ বলেছেন, ‘এটা মনে রাখার মতো যে গত মাসে বিশ্বের তেলের চাহিদার (আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থা দ্বারা) উল্লেখযোগ্য নিম্নগামী সংশোধনের পিছনে কোভিড সংক্রমণের বিস্তারের প্রতি চীনের জিরো টলারেন্স নীতি ছিল প্রধান কারণ।’

এদিকে, আইসিই এক্সচেঞ্জ, ব্রেন্ট বেঞ্চমার্কের আবাসস্থল, ফ্রন্ট-মান্থ ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচারের জন্য প্রাথমিক মার্জিন রেট ৪.৯২ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর ফলে মঙ্গলবার ব্যবসার সমাপ্তি থেকে ফিউচার পজিশনকে আরও ব্যয়বহুল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এবং ক্রমবর্ধমান সুদের হার বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার সম্ভাবনাকে হাইলাইট করার কারণে বাজারের অংশগ্রহণকারীরা শুক্রবার মার্কিন সিপিআই ডেটার দিকেও নজর রাখবে।

মার্কিন অশোধিত তেলের মজুদ গত সপ্তাহে প্রায় ১.১ মিলিয়ন ব্যারেল বেড়েছে বলে ধারণা করা হয়েছিল।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রতিশোধ হিসেবে রাশিয়ার তেলের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা ৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু হতে চলেছে এবং ফেব্রুয়ারিতে তেল পণ্য আমদানি বন্ধ করে দেওয়া হবে৷

অপরদিকে পাল্টা পদক্ষেপে নর্ডস্ট্রিম-১ পাইপলাইনের মাধ্যমে ইউরোপে জ্বালানি রপ্তানি প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে রাশিয়া। ফলে আসন্ন শীতে তীব্র জ্বালানি সংকট দেখা দিবে সমগ্র ইউরোপে। জ্বালানির ভারসাম্যহীনতার কারণে লাফিয়ে বাড়ছে মূল্যস্ফীতি, দুর্ভোগে পড়ছে সাধারণ মানুষ।