প্রথমবার্তা,বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : ওপেনএআই এর চ্যাটবট চ্যাটজিপিটির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ‘লামা ২’ উন্মোচন করেছে সামাজিক মাধ্যম জায়ান্ট মেটা।

এ কোম্পানির প্রধান মার্ক জাকারবার্গ মঙ্গবার লামা চালুর ঘোষণা দিয়ে বলেন, মাইক্রোসফটের সঙ্গে জোট বেঁধে তৈরি করা নতুন এই ‘এআই সিস্টেম’ গবেষণা ও বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে বিনামূল্যেই ব্যবহার করা যাবে।

মাইক্রোসফটও বলেছে, লামা ২ উন্মোচনের পেছনে তাদের উদ্দেশ্য হল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধাগুলোকে ‘সর্বজনীন’ করে তোলা।

এর আগে ফেব্রুয়ারিতে এই এআই সিস্টেমের ‘লামা’ সংস্করণটি প্রকাশিত হয়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইন্ডিপেন্ডেন্ট লিখেছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করা অন্য বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর বিপরীতে অনেকটা উন্মুক্ত পদ্ধতিতে লামা নিয়ে কাজ করছে মেটা ও মাইক্রোসফট। এর ফলে বিভিন্ন কোম্পানি ও গবেষকরা নিজস্ব এআই ব্যবস্থা তৈরির জন্য লামার ডেটা ও কোড দেখার সুযোগ পাবেন।

এক ব্লগ পোস্টে মেটা লিখেছে, “আমাদের বিশ্বাস, এখনকার এআই মডেলগুলোর বিকাশে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে অগ্রসর হওয়াই সঠিক সিদ্ধান্ত। বিশেষ করে সেইসব জায়গায়, যেখানে এ প্রযুক্তি দ্রুত বিকশিত হচ্ছে।”

এর পক্ষে যুক্তি দিয়ে মেটা বলছে, নিজস্ব এআই তৈরির জন্য যে কম্পিউটিং সক্ষমতা দরকার, অনেক স্টার্টআপ, উদ্যোক্তা ও গবেষককের পক্ষে তার ব্যবস্থা করা সম্ভব না। তাদেরকে এরকম বিস্তৃত পরিসরে প্রবেশের সুযোগ দিলে তারা বিভিন্ন পরীক্ষা চালানোর পাশাপাশি চমকপ্রদ সব উদ্ভাবনের সুযোগ পাবে। অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবেও সেটা লাভজনক হবে।

মেটার নতুন এআই ব্যবস্থার বিপরীতে ওপেনএআই’র চ্যাটজিপিটি বা গুগলের বার্ডের মতো চ্যাটবটগুলো ‘ওপেন সোর্স’ নয়।

“ওপেন সোর্স সুবিধা বিভিন্ন উদ্ভাবনে সহায়ক, কারণ অনেক ডেভেলপারই এই নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে নিজস্ব এআই সিস্টেম তৈরির সুযোগ পাবেন,” এক ফেইসবুক পোস্টে বলেন জাকারবার্গ।

“এটা নিরাপত্তা ব্যবস্থাকেও উন্নত করে, কারণ যখন সফটওয়্যারটি উন্মুক্ত থাকে, তখন লোকজন এতে পরীক্ষা চালিয়ে সম্ভাব্য সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারে। আমার বিশ্বাস, এই ইকোসিস্টেমকে আরও উন্মুক্ত করা গেলে বেশ কিছু সমস্যার সমাধান খোঁজা সম্ভব। আর সেজন্যই আমরা ‘লামা ২’কে ওপেন সোর্স হিসেবে এনেছি।”

ইন্ডিপেন্ডেন্ট লিখেছে, মেটা এমন দাবি করলেও লামা ২ তৈরিতে যে ডেটা তারা ব্যবহার করেছে, তা নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে।

এই নতুন মডেলের সঙ্গে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, সর্বজনীন উৎস থেকে পাওয়া ডেটার ভিত্তিতে এই এআই প্রশিক্ষিত। সেখানে মেটার কোনো পণ্য বা সেবার ডেটা ব্যবহৃত হয়নি। কিন্তু বিশেষভাবে কী ধরনের ডেটা সেখানে ব্যবহৃত হয়েছে, সেটাও উল্লেখ করা হয়নি।

ওই গবেষণাপত্রে অবশ্য লেখা আছে, যেসব ওয়েবসাইটে একক ব্যক্তি সম্পর্কে অনেক বেশি ব্যক্তিগত তথ্য রয়েছে, সেসব ডেটা লামা ২ থেকে সরানো হয়েছে।

মেটা বলেছে, নতুন এআই মডেলগুলো সরাসরি ডাউনলোড করা যাবে অথবা মাইক্রোসফটের ক্লাউড প্ল্যাটফর্ম ‘আজুর’-এ পাওয়া যাবে।

“ডেভেলপাররা এর মাধ্যমে বিভিন্ন উদ্ভাবন করার পাশাপাশি কনটেন্ট ফিল্টারিং ও নিরাপত্তা ফিচারের প্রয়োজনীয় টুল বানাতে পারবেন।

“এটি এমনভাবে অপ্টিমাইজ করা, যাতে সহজেই উইন্ডোজে চালানো যায়। ফলে, ডেভেলপাররাও নিজস্ব প্ল্যাটফর্মের গ্রাহকদের জন্য জেনারেটিভ এআই অভিজ্ঞতা আনার লক্ষ্যে নিরবচ্ছিন্ন উপায়ে কাজের সুযোগ পাবেন।”